উত্তম হাওলাদার, পটুয়াখালী থেকে : পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের উমেদপুর গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারে জন্ম হয় বেল্লাল হোসেনের। জন্মগতভাবেই তার দু’টি হাত নেই। জন্মের পর থেকেই নানা কুসংস্কার ছড়াতে থাকে গ্রামের লোকজন।
এসব কারণে বাবা-মা প্রথমদিকে বেল্লালকে ঘরের মধ্যে লুকিয়ে রাখতো। মা হোসনে আরা বেগম ছেলেকে লেখাপড়া শিখিয়ে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলার শপথ নেন। এরপর ঘরে বসে বেল্লালকে পড়াতে শুরু করেন। পায়ের আঙ্গুলের মধ্যে চক দিয়ে সিলেটে লেখা শিখানো অভ্যাস তৈরি করে ফেলেন।
সেই থেকে উৎসাহ পায় বেল্লাল। এভাবেই বেল্লাল আয়ত্ব করে ফেলে পা দিয়ে লেখার। এরপর বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরের উমেদপুর মাদ্রাসায় তাকে ভর্তি করা হয়। শুরু হয় দিনমজুর মো. খলিল আকনের শারীরিক প্রতিবন্ধী সন্তান বেল্লালের শিক্ষিত হওয়ার সংগ্রাম।
উমেদপুর দাখিল মাদ্রসা সূত্রে জান গেছে, পা দিয়ে লিখে বেল্লাল পিএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় এ প্লাস পেয়েছে। এখন সে দাখিল পরীক্ষা দিচ্ছে। উমেদপুর দাখিল মাদ্রসার মানবিক বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী বেল্লাল পৌর শহরের নেছার উদ্দিন ফাজিল সিনিয়র মাদ্রাসা কেন্দ্রে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।
বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বেল্লাল জানান, পরীক্ষা ভালই হচ্ছে। পা দিয়ে লেখতে তার কোনো সমস্যা হয় না। তার ইচ্ছা উচ্চশিক্ষা শেষে একজন আদর্শ শিক্ষক হওয়ার। বেল্লালের মা হোসনে আরা জানান, জন্ম থেকেই ওর দুই হাত নেই। পা ও ছিলো বাঁকা। গ্রামের মানুষের অনেক কথা শুনতে হয়েছে।
বেল্লালের বাবা মো.খলিলুর রহমান আকন জানান, সংসারের অভাব অনটনের কারণে বেল্লালের জন্মের পর ভালোভাবে চিকিৎসা করতে পারিনি। উমেদপুর দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো.হাবিবুর রহমান জানান, বেল্লাল অত্যন্ত মেধাবী। রোদ, ঝড়, বৃষ্টি যাই থাকুক না কেন সে নিয়মিত মাদ্রাসায় আসতো। -বিডি প্রতিদিন
এমটিনিউজ/এসএস