শনিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৮, ০৮:৪৮:২৯

ইমামকে ন্যাড়া করে মল খাওয়ানো সেই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

ইমামকে ন্যাড়া করে মল খাওয়ানো সেই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে মো. আব্দুল গফফার নামে এক ইমামকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন, মল খাওয়ানো ও মাথা ন্যাড়া করে দেয়ার অভিযোগে ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া পটুয়াখালী সদর উপজেলার ছোট বিঘাই গ্রামের মো. রুস্তম আলীর ছেলে মো. আনসার (৩৪) ও মো. জলিলকেও (৪০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বেতাগী উপজেলার মিয়ারহাট গ্রামের একটি জামে মসজিদে ইমামতি ও খতিবের দায়িত্ব পালন করেন আব্দুল গফফার। অবসর সময়ে ঝাড়ফুঁকের মাধ্যমে বিভিন্ন রোগীর চিকিৎসা করেন তিনি। মসজিদের কমিটি সংক্রান্ত বিষয়ে রাসেলের সঙ্গে মতবিরোধ ছিল ওই ইমামের।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার বিকালে ইমাম আবদুল গফফারকে ফোন করে এক রোগীর চিকিৎসা (ঝাড়ফুঁক) দেয়ার কথা বলে দক্ষিণ মির্জাগঞ্জে নিয়ে আসেন মির্জাগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. রাসেল রাসেল। সেখান থেকে তাকে মোটরসাইকেলে তুলে রাসেলের বাড়িতে নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে অমানবিকভাবে মারধর করেন রাসেল ও তার কয়েকজন সহযোগী। এসময় ওই ইমামের মাথা ন্যাড়া করে দেয় তারা। পরে টয়লেট থেকে মানুষের মল এনে তার মুখে ঢেলে দেয়।

খবর পেয়ে গাছের সঙ্গে হাত-পা বাধা অবস্থায় আহত আব্দুল গফফারকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।

এ ঘটনায় ইমামের বড় ভাই  মো. রাজ্জাক বাদী হয়ে মির্জাগঞ্জ থানায় রাসেলসহ ৮ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুল গফফার গণমাধ্যমকে বলেন, আমি মির্জাগঞ্জ দরবার শরিফে কিছুদিন চাকরি করেছি, তখন থেকে ছাত্রলীগ নেতা রাসেলের সঙ্গে পরিচয়। আমার কাছে বিশ্বাস করে কিছু রোগী আসত ঝাড়ফুঁক নেয়ার জন্য। আমি আল্লাহর কালাম পড়ে পানিপড়া দিলে অনেকে ভালো হয়েছে। তবে আমি কখনও মানুষের ক্ষতি করিনি।

অভিযুক্ত মো. রাসেলের দাবি, মির্জাগঞ্জে চাকরির সময় ওই ইমাম ভয়ভীতি দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ঝাড়ফুঁক দিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। এমনকি তার এক খালা ও খালাতো বোনের সঙ্গেও চিকিৎসার নামে প্রতারণা এবং আপত্তিকর আবদারও করেছে। তাই তাকে গণধোলাই দেয়া হয়েছে বলে দাবি করেন রাসেল।

তবে প্রতারণা এবং নারীদের অনৈতিক প্রস্তাবের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আব্দুল গফফার।

মির্জাগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মেহেদী হাসান বলেন, ইমাম সাহেবকে অমানুবিকভাবে মারধর করা হয়েছে। তার শরীরে মারের চিহ্ন স্পষ্ট। সে যদি কোন ঝামেলা করে থাকে তার জন্য আইন আছে, আদালত আছে। এভাবে কেন নির্যাতন করতে হবে?

তিনি জানান, এরইমধ্যে রাসেলসহল তিন জনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। 
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে