পটুয়াখালী থেকে: মায়ের চিকিৎসার টাকা জোগাতে চলতি এইচএসসি পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে আসে আরিফ হোসেন। বন্ধুরা দাবিকৃত টাকা না পেয়ে ধরিয়ে দিলেন পুলিশের হাতে। বৃহস্পতিবার সকালে বরগুনার আমতলী বকুলনেছা মহিলা কলেজ কেন্দ্রের প্রবেশপথে এ ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, বরগুনা সদর উপজেলার চালিতাবুনিয়া গ্রামের আনিসুর রহমানের ছেলে মেহেদী হাসান জয় ২০১৪ সালে আমতলী সরকারি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়। ২০১৬ সালে ওই কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে অকৃতকার্য হয়। পরপর দুবছর অকৃতকার্য হয় মেহেদী।
২০১৮ সালের এইচএসসি প্রক্সি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য পটুয়াখালী সরকারি কলেজের মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র আরিফ হোসেনের সঙ্গে ২৫ হাজার টাকায় চুক্তি করে। মেহেদী ইতিমধ্যে আরিফকে ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছে।
এদিকে মেহেদীর প্রক্সি পরীক্ষার খবর জানে তার দুই বন্ধু মুরাদ ও সোহেল। তারা দুজনে মেহেদী হাসান জয়ের কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করে। ওই টাকা দিতে অস্বীকার করে মেহেদী। এতে ক্ষিপ্ত হয় তারা (দুই বন্ধু)।
বৃহস্পতিবার সকালে আরিফ হোসেন উচ্চতর গণিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে আমতলী বকুলনেছা পরীক্ষা কেন্দ্রে আসে। পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশের পূর্বেই দুই বন্ধু মুরাদ ও সোহাগ আরিফ হোসেনকে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেয়। পুলিশ আরিফ হোসেনের প্রবেশপত্র যাচাই-বাছাই করে সন্দেহ হলে তাকে গ্রেফতার করে।
আরিফ হোসেনের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর গ্রামে। তার বাবার নাম বাবুল শরীফ।
প্রক্সি পরীক্ষা দিতে আসা আরিফ হোসেন বলেন, মায়ের চিকিৎসার জন্য টাকার প্রয়োজন হয়। কোনো উপায় না পেয়ে মেহেদীর প্রক্সি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের শর্তে ২৫ হাজার টাকায় চুক্তিবদ্ধ হই। এ ঘটনা জেনে মেহেদীর দুই বন্ধু মুরাদ ও সোহাগ তার (মেহেদী) কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করে। দুই বন্ধুর দাবিকৃত টাকা মেহেদী না দেয়ায় তারা আমাকে ধরিয়ে দিয়েছে।
আমতলী বকুলনেছা মহিলা কলেজের কেন্দ্র সচিব মো. মজিবুর রহমান বলেন, পুলিশ সন্দেহ করে কেন্দ্রে প্রবেশপথে আরিফকে গ্রেফতার করেছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমতলী থানার ওসি মো. সহিদ উল্যাহ বলেন, পরীক্ষার কেন্দ্রে প্রবেশপথে আরিফকে সন্দেহ হয়। পরে তার কাগজপত্র বাচাই-বাছাইকালে দৌড়ে পালানোর সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এমটি নিউজ/এপি/ডিসি