নিউজ ডেস্ক : পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সন্তানের চিকিৎসা করাতে এসে চিকিৎসকের হাতে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন এক গৃহবধূ (২২)। গতকাল মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে ওই গৃহবধূর সন্তানকে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে স্থানন্তর করা হয়েছে।
ওই গৃহবধূর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে ওই গৃহবধূ তার ১১ মাস বয়সী অসুস্থ কন্যা সন্তানকে নিয়ে বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। সেখানে চিকিৎসক আবদুর রউফের অধীনে ওই শিশুকে ভর্তি করা হয়। সন্ধ্যার দিকে আবদুর রউফ ওই গৃহবধূকে ফোন করে হাসপাতাল কোয়াটারে তার চেম্বারে দেখা করতে বলেন। এরপর রাত ৮টার সময় ওই গৃহবধূ তার খালাকে সঙ্গে নিয়ে ডাক্তারের চেম্বারে যান। গৃহবধূর সঙ্গে তার খালাকে দেখে ওই চিকিৎসক রাগান্বিত হয়ে ওঠেন এবং তাকে পুনরায় হাসপাতালে গিয়ে ভর্তির কাগজপত্রসহ একা আসতে বলেন।
স্বজনরা আরও জানান, প্রায় ১০ মিনিট পর ওই গৃহবধূ ডাক্তারের চেম্বারে যান। তখন চেম্বারে তিনি ছাড়া অন্য কেউ ছিলেন না। এই সুযোগে আবদুর রউফ তাকে কুপ্রস্তাব দেন। ওই সময় হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেলে রউফ তাকে জাপটে ধরেন এবং শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন। ডাক্তার ও গৃহবধূর ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে গৃহবধূ চেম্বার থেকে বের হয়ে তার এক মামাকে ফোনে বিস্তারিত জানালে মামা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে রউফকে লাঞ্চিত করেন।
ঘটনাটি ছড়িয়ে পরলে স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিকসহ ২০ থেকে ২৫ জন লোক ঘটনাস্থলে জড়ো হন। পরে ওই গৃহবধূর পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি পটুয়াখালী সিভিল সার্জন এবং বাউফলের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকেও জানানো হয়। ঘটনার পর আজ বুধবার হাসপাতাল থেকে ওই গৃহবধূর সন্তানকে পটুয়াখালী জেনালের হাসপাতালে স্থানন্তর করা হয়েছে।
একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ডাক্তার আবদুর রউফ বাউফল হাসপাতালে এর আগেও চাকরি করেছেন। ওই সময় তার বিরুদ্ধে একাধিক নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছিল। কয়েক মাস আগেও তিনি এক তরুণীর সঙ্গে অপকর্ম করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়লে বাধ্য হয়ে তাকে বিয়ে করেন এবং এক মাস পর তার সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করেন। চারিত্রিক সমস্যার কারণে প্রথম স্ত্রী তাকে তালাক দেন। এরপর আবদুর রউফ দ্বিতীয় বিয়ে করেন। দ্বিতীয় স্ত্রী বর্তমানে গ্রামের বাড়িতে থাকেন। বাউফল হাসপাতালের কোয়াটারে তিনি একা থাকেন। আর এই সুযোগে তিনি অনৈতিক কাজ করছেন।
এ বিষয়ে ডা. আবদুর রউফ বলেন, ‘ঘটনাটি সত্য নয়। তার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে একটি মহল এ অপপ্রচার চালিয়েছে। আমি রোগীর অবস্থা জানার জন্য রোগীর মাকে ফোন করেছিলাম।’
বাউফল হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবাবর পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, ‘ঘটনাটি আমাকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। কোনো লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি। তবে ডাক্তারদের নিয়ে আলোচনা করে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।’