এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : পটুয়াখালীর বাউফলে একসঙ্গে ৫ সন্তানের জন্ম হয়েছে। কিন্তু এই নবজাতকদের খরচ সামলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন তাদের বাবা-মা।
জানা যায়, গত ৬ অক্টোবর দুপুর ১২টার দিকে বরিশাল শহরের ডায়াবেটিক হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে একসঙ্গে ৫ সন্তানের জন্ম দেন লামিয়া নামের এক গৃহবধূ। লামিয়া উপজেলার কালিশুরী ইউনিয়নের সিংহেরাকাঠী গ্রামের সোহেল হাওলাদারের স্ত্রী। স্থানীয় বাহেরচর বাজারে সোহেল হাওলাদারের ছোট্ট একটি মুদি দোকান রয়েছে। এই মুদি দোকানের আয় দিয়েই চলে তার সংসার। একসঙ্গে ৫টি সন্তান পেয়ে অনেক খুশি সোহেল ও তার স্ত্রী লামিয়া; কিন্তু এই নবজাতকদের খরচ সামলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।
সেই সন্তানের বাবা সোহেল হাওলাদার বলেন, দুধ ও ন্যাপকিন ক্রয় করতে প্রতিদিন দেড় থেকে দুই হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। এছাড়াও বাচ্চারা অসুস্থ হলে ডাক্তারের কাছে যেতে হয়। প্রতিদিন এত টাকা খরচ করার সামর্থ্য আমার নেই। একসঙ্গে ৫ সন্তানের জন্ম দিয়ে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন স্ত্রী লামিয়া। তাকেও এই মুহূর্তে বেশি বেশি পুষ্টিকর খাবার দেওয়া প্রয়োজন। আমার এখন যা আয় হয় তা দিয়ে এই নিষ্পাপ শিশুদের লালন পালন করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, সন্তান প্রসবের সময় বরিশাল হাসপাতালে ৯ দিন থাকতে হয়েছে। এখন পর্যন্ত ধারদেনা করে ও একটি এনজিও থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ প্রায় ২ লাখ টাকা। সবকিছু সামলাতে গিয়ে আমি হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছি।
সোহেল হাওলাদারের শাশুড়ি শাহনাজ বেগম বলেন, আমার ৫ নাতি-নাতনির নাম রেখেছি হাসান, হোসাইন, মোয়াজ্জেম, লাবিবা ও উমামা। সিজার অপারেশন ছাড়াই স্বাভাবিকভাবে তারা জন্ম নেওয়ার পর অনেকে দেখতে এসেছেন। কেউ কেউ সাহায্যর কথা বলেছেন; কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেননি। মা-মেয়ে মিলে ৫ সন্তানের সেবা শুশ্রূষা করে যাচ্ছি। একটানা লালন পালন করতে গিয়ে মাঝেমধ্যে দুজনেই আবার অসুস্থ হয়ে যাই। সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে সাহায্যের হাত বাড়ালে এই নিষ্পাপ মুখগুলো স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠবে।
এ বিষয়ে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুর রউফ বলেন, নবজাতকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার বিষয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে আর্থিক সহায়তা প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।