এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : একটি সাদা বক পোষ মানিয়ে আলোচনার ঝড় তুলেছেন পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নুরাইনপুর বাজারের ব্যবসায়ী হেমায়েত উদ্দিন। বিশেষ কোনো কেরামতিতে নয়, আহত একটি বকের ছানাকে উদ্ধারের পর যত্ন-পরিচর্যার পর সুস্থ করে পোষ মানালেন তিনি। এখন বকটি হেমায়েত উদ্দিনের সঙ্গ ছাড়া কিছুই যেন বোঝে না।
হাট-বাজারের হাকডাক আর মানুষের ভিড় উপেক্ষা করে সাদা বকটি নির্ভয়ে দাঁড়িয়ে থাকে তার দোকানের সামনে। এমন দৃশ্য দেখে হেমায়েত উদ্দিনের দোকানের সামনে ভিড় করেন উৎসুক মানুষ।
হেমায়েত উদ্দিন (৩৮) নুরাইনপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি প্রায় চার বছর ধরে বাজারের মসজিদের সামনে স্টেশনারির ব্যবসা করছেন। গত চার মাস ধরে তার দোকানেই বসবাস করছে বকটি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, স্থানীয়ভাবে ‘বকের বাড়ি’ নামে পরিচিত নুরাইনপুর বাজারসংলগ্ন খানবাড়ির একটি গাছ থেকে চার মাস আগে ঝড়ে আঘাতে নীচে পড়ে যায় একটি বকের ছানা। তখন একটি গুইসাপ সেটিকে আক্রমণ করলে স্থানীয় ব্যবসায়ী হেমায়েত উদ্দিন এগিয়ে এসে বকের ছানাটিকে উদ্ধার করেন। এরপর পরম যত্নে পরিচর্যা করে নিজের সন্তানের মতো বক ছানাটিকে সুস্থ করে তোলেন তিনি।
রোববার সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা যায়, বকটি কখনও দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে, কখনও দোকানের ছাউনিতে গিয়ে বসে। কিছুক্ষণ পর আবার হেমায়েত উদ্দিনের চেয়ারের হাতলে এসে বসে পড়ে। মানুষের উপস্থিতিতে কোনো ভয় ভীতি নেই তার। দোকানের কোনো কিছু নষ্ট করে না, এমনকি নির্দিষ্ট জায়গায় মলত্যাগ করে। যেন নিয়মশৃঙ্খলা জানা এক পরিবারের সদস্য।
হেমায়েত উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, বকটি পাওয়ার পর থেকে কখনও বেঁধে রাখিনি। সব সময় দোকানের আশপাশেই থাকে, দূরে কোথাও যায় না। ওর ক্ষুধা পেলে আমি বুঝতে পারি, টুপি বা পাঞ্জাবি ধরে খুনসুটি করে। তখন মাছ খাওয়াই। ছোট মাছ কিনে ফ্রিজে রেখে দিই, ফ্রিজ থেকে এনে নরমাল করে খাওয়াই। কখনও নিজেই জাল ফেলে মাছ ধরে আনি। অসুস্থ হলে প্যারাসিটামল ট্যাবলেট খাওয়াই, তাতেই ভালো হয়ে যায়। শিশুর মতো যত্ন নিতে হয় ওকে। রাতে দোকানেই থাকে।
নুরাইনপুর বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, মানুষ আর বকের এমন বন্ধুত্ব আগে দেখিনি। প্রতিদিন বাজারে এলে বকটিকে হেমায়েতের দোকানে দেখা যায়। ওর যত্ন নেওয়ার ধরনটা সত্যিই অবাক করার মতো।