শনিবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৫, ০৭:৫৩:২৪

বউ পছন্দ না, তাই ছোঁয়াকে ছ্যাঁকা

বউ পছন্দ না, তাই ছোঁয়াকে ছ্যাঁকা

পিরোজপুর প্রতিনিধি : কি নিষ্ঠুর দাদি, ছেলের বউ পছন্দ না বলে খায়েস মিটিয়েছেন নাতনিকে নির্যাতন করে।  মাছুম বাচ্চার ওপর এমন অমানুষিক নির্যাতনে ধিক্কার জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

দাদির গরম খুন্তির ছ্যাঁকায় আহত সাড়ে তিন মাস বয়সী শিশু ছোঁয়া এখন পিরোজপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।  ছেলের বউ পছন্দ না হওয়ায় ছোঁয়াকে ছ্যাঁকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।  

শিশুটির ডান পায়ের ঊরুতে বেশ বড় ধরনের ক্ষত তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।  তা সেরে উঠতে বেশ সময় লাগবে।  রতবে এ ঘটনায় থানায় কোনো অভিযোগ করা হয়নি বলে জানা গেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার পিরোজপুর সদর উপজেলার ভৈরমপুর গ্রামে।  ওই গ্রামের শাহ আলম খানের ছেলে বাহরাইন প্রবাসী শফিক খানের মেয়ে ছোঁয়া।  এমন নির্মম ঘটনায় বিচার দাবি করেছেন শিশুর মা হাসি বেগম।  

শিশুটির পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের প্রথমদিকে পারিবারিকভাবে শফিকের সঙ্গে বিয়ে হয় হাসির।  বিয়ের আগে শফিক পাঁচ বছর বাহরাইন ছিলেন।  বিয়ের দুই মাস পর তিনি আবার বাহরাইন চলে যান। এরপর থেকে শফিকের মা মুরফিয়া বেগম ছেলের বউ হাসির ওপর নির্যাতন করতে থাকেন।  এ অবস্থায় হাসির কোলে আসে মেয়েশিশু।  তিনি অধিকাংশ সময় বাবার বাড়িতেই থাকতেন বলে জানা যায়।

হাসির বাবা-মার অভিযোগ, শাশুড়ি মুরফিয়া অসুস্থতার কথা বলে হাসিকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যান।  গত বুধবার গরম খুন্তি দিয়ে ছোঁয়ার ডান পায়ের ঊরুতে ছ্যাঁকা দেন তিনি।  এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে হাসি তার শাশুড়িকে গালমন্দ করেন।  এতে তার শাশুড়ি আরো ক্ষেপে যান।  একপর্যায়ে দা দিয়ে হাসিকে আঘাত করেন।  এতে হাসির মাথার কয়েক গোছা চুল কেটে যায়।

তারা জানান, শাশুড়ির এমন আচরণে হাসি সেখান থেকে পালিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে।  এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন হাসির মা-বাবা।

এদিকে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার ছোঁয়াকে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসার পর বাড়িতে নিয়ে যায় নানাবাড়ির লোকজন।  বাড়িতে নেয়ার পর শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গতকাল শুক্রবার রাতে ছোঁয়াকে আবার পিরোজপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।  বর্তমানে ছোঁয়া  চিকিৎসাধীন আছে।

ছোঁয়ার মা হাসি জানান, বিয়ের পর থেকেই নির্যাতন চালিয়ে আসছেন শাশুড়ি। মেয়েকে খুন্তির ছ্যাঁকা দেয়ার পর তার ভাসুর রফিক খান হাসপাতালে এসেছিলেন।  তিনি দেখে গেছেন ছোঁয়ার অবস্থা।  শ্বশুরবাড়ি থেকে আর কেউ ছোঁয়াকে দেখতে আসেনি।  এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন তিনি।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ননী গোপাল রায় জানান, শিশুটির ক্ষত বেশ বড়।  সেরে উঠতে বেশ সময় লাগবে।  এ ধরনের ঘটনার জন্য তিনি মর্মাহত।  

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন জানান, এ বিষয়ে এখনো কোনো মামলা হয়নি।  মামলা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।

এ বিষয়ে হাসির শাশুড়ির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
১০ অক্টোবর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে