পিরোজপুর থেকে : পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলার ভিটাবাড়ীয়া গ্রামে স্ত্রীর পরকীয়া হাতেনাতে ধরা পড়ায় স্বামী বেল্লাল সরদার (২৭) নামে এক যুবক বিষপান করে আত্মহত্যা করেছেন। তিনি দক্ষিণ ভিটাবাড়ীয়া গ্রামের জলিল সরদারের ছেলে।
এ ঘটনায় পুলিশ নিহত বেল্লালের স্ত্রী সোনিয়া বেগম এবং পরকীয়া প্রেমিক (সোনিয়ার মায়ের দ্বিতীয় স্বামীর ছেলে) রাজুকে গ্রেফতার করেছে। থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলার ভিটাবাড়ীয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ ভিটাবাড়ীয়া গ্রামের বাসিন্দা জলিল সরদারে ছেলে বেল্লালের সঙ্গে প্রায় ১৪ বছর পূর্বে ভাণ্ডারিয়া পৌর শহরের বাসিন্দা মো. জামালের প্রথম স্ত্রীর মেয়ে সোনিয়ার বিবাহ হয়।
সেই ঘরে মো. ঈসা নামের ৯ বছরের একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। নিহত বেল্লাল ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালাতেন। নিহত বেল্লালের চাচি রানী বেগম জানান, সোনিয়ার মায়ের দ্বিতীয় স্বামীর ছেলে মো. রাজু বৈমাত্রেয় বোন সোনিয়ার বাড়িতে বেড়াতে এসে সৎবোনের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনা জানাজানি হলে বেল্লাল ভাণ্ডারিয়া পৌর শহরের ভুবনেশ্বর ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় বাসা ভাড়া করে চলে যায় এবং প্রায় দেড় বছর বসবাস করে আর্থিক সংকটে পড়ে পুনরায় পৈতৃক বাড়িতে ফিরে আসে।
এদিকে স্ত্রীর এ ধরনের ঘটনা এলাকাবাসীর মুখে শোনা ছাড়াও নিজের হাতেনাতে ধরা পড়ায় স্বামী-স্ত্রী তুমুল ঝগড়া হয়। ক্ষোভে ঘৃণায় গত ৫ অক্টোবর দুপুরে বেল্লাল বিষপান করেন। পরে তাকে জ্বর, পাতলা পায়খানার রোগী বলে অচেতন অবস্থায় ভাণ্ডারিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বিষয়টি চিকিৎসকদের সন্দেহ হলে বেল্লালকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে বৃহস্পতিবার বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বেল্লাল।
এ ঘটনায় নিহত বেল্লালের বাবা মো. জলিল সরদার বাদী হয়ে পুত্রবধূ সোনিয়া, তার বৈমাত্রেয় ভাই রাজু এবং শ্বশুর জামালকে আসামি করে আত্মহত্যার প্ররোচনায় মামলা দায়ের করেন। ভাণ্ডারিয়া থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. বজলুর রহমান জানান, এ ঘটনায় ৩০৬ ধারায় আত্মহত্যার প্ররোচনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ এ মামলার আসামি বেল্লালের স্ত্রী সোনিয়া বেগম এবং তার বৈমাত্রেয় ভাই রাজুকে গ্রেফতার করে শুক্রবার সকালে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে।