সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০৫:২৩:০৫

ঘরে ঝুলল ছেলে, গাছে ঝুলে মরল মা

ঘরে ঝুলল ছেলে, গাছে ঝুলে মরল মা

সাতক্ষীরা : ছেলেটি ঠিকমতো লেখাপড়া করতো না। স্কুলেও যেত না।  এ কারণে গৃহশিক্ষকের হাতে মার খেত প্রায়ই।  তার মাও তাকে মারধর করতেন।  

এ কারণে অভিমানে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সুমন মণ্ডল (১৩) রোববার রাত ৮টার দিকে ঘরের মধ্যে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

সেই শোক সইতে না পেরে সুমনের মা চন্দনা মণ্ডল ( ৫৫) বাড়ির পাশে একটি গাছের সঙ্গে শাড়ির আঁচল পেঁচিয়ে আত্মহননের পথ বেছে নেন।
 
ঘটনাটি ঘটেছে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার কাদাকাটি গ্রামে।  রাতে মা ও ছেলের লাশ নামানো হয়।  সোমবার সকালে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
 
কাদাকাটি ইউপি সদস্য সঞ্জয় কুমার জানান, পড়ালেখা না করায় সুমনকে মারধর করেছিলেন তার মা চন্দনা।  এর কিছুক্ষন পর সে বাড়ির কাছে একটি বাড়িতে প্রাইভেট পড়তে যায়।  

সেখান থেকে ফিরে এসে সবার অজান্তে ঘরের আড়ার সঙ্গে চাদর পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে সুমন।
 
তিনি জানান, কিছু সময় পর সুমনের মা চন্দনা রানী ঘরে ঢুকতে গিয়ে অন্ধকার দেখেন।  লাইট জ্বালিয়েই দেখতে পান নিজের ছেলের ঝুলন্ত লাশ।
 
সঞ্জয় কুমার বলেন, মায়ের ডাকাডাকিতে পাড়ার সবাই ছুটে আসে।  স্থানীয় চিকিৎসক বিনয় কুমার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
 
‘হায়রে কেন মারলাম আমার সোনাটারে’ বিলাপ করতে করতে সবার চোখের আড়ালে চলে যান চন্দনা।  এরপর চন্দনা রানীকে বাড়ির পাশের একটি গাছে ঝুলতে দেখেন স্বজনরা।
 
মা ও ছেলের আত্মহত্যার ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।  খবর পেয়ে সুমনের বাবা মনোরঞ্জন মন্ডল কর্মস্থল মাছের ঘের থেকে ফিরে এসে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন।

তিনি বলেন, তিন ছেলেমেয়ের দুজনের বিয়ে হয়ে গেছে।  এক ছেলে আর স্ত্রী ছিল, তারাও চলে গেল। আমি এখন কি করবো।‘
 
আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রহমান বলেন, আত্মহত্যা নিয়ে কারো কোনো অভিযোগও পাওয়া যায়নি।  তারপরও বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।  

কোনো অভিযোগ না পেলে স্বাভাবিক নিয়মে তাদের শেষকৃত্য হবে বলে জানান তিনি।
১২ সেপ্টেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে