সাতক্ষীরা: অবশেষে বড়বাড়িতে ঠিকানা হলো সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা এলাকার কুড়িয়ে পাওয়া সেই শিশুকন্যা অর্পিতার।
শনিবার সন্ধ্যায় শিশুটিকে আনুষ্ঠানিভাবে তার নতুন বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এর আগে গত মঙ্গলবার কে বা কারা পলিথিনে মুড়িয়ে বাচ্চাটিকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে চলে যায়। কান্নার শব্দ শুনে পথচারীদের দৃষ্টিতে আসে শিশুটি। পথচারীরা থানায় খবর দিলে পাটকেলঘাটা থানা পুলিশের ওসি মহিবুল নিজেই বাচ্চাটিকে উদ্ধার করে পাশের লোকনাথ নার্সিং হোমে ভর্তি করেন।
শিশুটির সার্বিক দেখাশুনা করেন ওসি নিজেই। প্রথম দিনেই ওসি মহিবুল ইসলাম বাচ্চাটির খাওয়ার জন্য দুধ কিনে দেন। প্রতিদিন শত ব্যস্ততার মাঝে একবার ক্লিনিকে গিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন শিশুটির।
মঙ্গলবার রাতেই পাটকেলঘাটা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিবুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, শিশুটি আমার তত্ত্বাবধানে রয়েছে। যতদিন উপযুক্ত কাউকে না পাই ততদিন এই নার্সিং হোমে রেখেই শিশুটিকে লালন পালন করা হবে। শিশুটি ভালো থাকবে এমন কাউকে পেলে তার দায়িত্বে তুলে দেয়া হবে শিশুটি।
শিশুটিকে হস্তান্তর করার পর ওসি মহিবুল ইসলাম জানান, সংবাদটি অনলাইনে প্রকাশিত হওয়ার পর অনেকেই শিশুটির দায়িত্ব নেয়ার জন্য আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এর মধ্যে খুলনা মেট্রোপলিটন কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক মেরী খানম। যিনি গণিতে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেছেন। তার বাবা ডাক্তার, নানাও ডাক্তার। তার স্বামী ইয়াহিয়া নূর তুহিন ১০ বছর আমেরিকায় ছিলেন।
বর্তমানে সাংবাদিক, গীতিকার ও সুরকার। এই দম্পত্তির কোনো সন্তান নেই। আমার মনে হয়েছে এখানে থাকলে শিশুটি ভালো থাকবে। যার জন্য তাদের দায়িত্বে শিশুটিকে দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো জানান, যে দম্পত্তিকে শিশুটি দেয়া হলো তারা গোপালগঞ্জ শহরের মিয়া বাড়ি পরিবারের। ২৬১নং বাসার মালিক।
শিশুটিকে নেয়ার পর ইয়াহিয়া নূর তুহিন ও তার স্ত্রী মেরী খানম বলেন, আমাদের কোনো সন্তান নেই। আমাদের মেয়ের মতোই বড় হবে অর্পিতা।
শিশুটি হস্তান্তরের সময় পাটকেলঘাটা থানার ওসি মহিবুল ইসলাম, তার সহধর্মিণী ফাতেমাতুজ্জোহারা, সরুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান, পাটকেলঘাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি শেখ জহুরুল হক, সাংবাদিক মাসুদ রানা, এসআই বুলবুল, ইউপি চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমানসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
১৬ অক্টোবর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এআর