সাতক্ষীরা থেকে : আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে সাতক্ষীরা-৪ আসনে বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা জোর প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। জামায়াতে ইসলামীর কার্যক্রম দৃশ্যমান না হলেও তারাও বসে নেই বলে জানা গেছে। ভিতরে ভিতরে শক্তি সঞ্চয় করছে দলটি।
স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় থেকে সাতক্ষীরা-৪ আসনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা মজবুত ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে জামায়াতের অবস্থান সুদৃঢ় হয়। সাংগঠনিকভাবে বিএনপিও শক্তিশালী। দলীয় কোন্দল থাকায় আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ঘরের শত্রু বিভীষণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
এক্ষেত্রে বিএনপি-জামায়াত জোটগত নির্বাচন হলে বেকায়দায় পড়তে পারে আওয়ামী লীগ। গত ২৮ ডিসেম্বর শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদের উপনির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করে জয়লাভ করেন বিএনপি প্রার্থী। এই ইউপি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর পরাজয়ে অনেকটা চিন্তিত ও শঙ্কায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।
এ আসনের এমপি জগলুল হায়দার এলাকায় অনেক উন্নয়ন করেছেন। তবে সাধারণ মানুষ মনে করছে, এ আসনে বিএনপির মিত্র দল জামায়াতের সঙ্গে জোট হলে বেকায়দায় পড়তে পারে আওয়ামী লীগ। এবারও এ আসনে শক্তিশালী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম জগলুল হায়দার।
এ ছাড়া দলীয় মনোনয়নের চেষ্টায় আছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য এ কে ফজলুল হকের ছেলে এস এম আতাউল হক দোলন, জেলা শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক জি এম শফিউল আযম লেলিন এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গাজী আনিছুজ্জামান আনিস। এ আসনটি ধরে রাখতে চায় আওয়ামী লীগ।
তবে দলীয় কোন্দলের সুযোগ নিতে পারে শক্ত প্রতিপক্ষ বিএনপি-জামায়াত জোট-এমন ধারণা রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের। এ আসনে বিএনপির শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি কাজী আলাউদ্দীন। বিগত জোট সরকারের আমলে কালিগঞ্জ উপজেলায় তার হাত দিয়ে যে উন্নয়ন হয়েছে তা এখনো মানুষ মনে রেখেছে।
দলীয় মনোনয়ন পেলে তিনি জয়লাভ করবেন এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বিএনপির অপর সম্ভাব্য প্রার্থী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ইফতেখার আলী ও শ্যামনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক প্রধান শিক্ষক আবদুল ওয়াহেদ। নির্বাচনী মাঠে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তারা।
বর্তমান সংসদ সদস্য এস এম জগলুল হায়দার দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে উঠান বৈঠকসহ জনসংযোগ করে যাচ্ছেন। দলীয় মনোনয়ন পেলে তিনি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আতাউল দোলন এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে সম্পৃক্ত করে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। ১৯৯১ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে জামায়াত প্রার্থী গাজী নজরুল ইসলাম জয়লাভ করেন এ আসন থেকে।
জামায়াতের সাংগাঠনিক অবস্থা বেশ মজবুত এখানে। বিএনপি-জামায়াত জোট হলে তাদের জয়ের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না সাধারণ জনগণ। ২০০৮ সালের নির্বাচনে মহাজোটের পক্ষ থেকে জাতীয় পার্টির নেতা এইচ এম গোলাম রেজা জয়লাভ করেন। বর্তমানে তিনি দলের বাইরে। তারপরও নির্বাচনী এলাকায় তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
দলে পুনরায় ফিরে আসবেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। জাতীয় পার্টির অপর সম্ভাব্য প্রার্থী কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আবদুস সাত্তার মোড়ল। তিনি বলেন, ২০১৪ সালে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন। কিন্তু ওই সময়ে জোটের সিদ্ধান্তের কারণে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন। এবার মনোনয়ন পেলে জয়লাভ করবেন বলে জানান তিনি। বিডি প্রতিদিন
এমটিনিউজ/এসবি