নিউজ ডেস্ক: বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া মুক্তামণির শেষে চাওয়া পূরণ করেছে তার পরিবার। তার ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে তার দাদার কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে। বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
মুক্তামণির চাচা ওসমান গনি জানান, মুক্তামণি তার দাদার আদরের ছিল। সেও দাদাকে ভালোবাসতো। মুক্তামণি যখন ঢাকায় চিকিৎসাধীন, তখন তার দাদা মারা যান।
তিনি আরো বলেন, চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ফেরার পর মুক্তামণি দাদার কবর দেখতে চাইতো। তখন হুইল চেয়ারে করে দাদার কবর দেখিয়ে আনা হতো। কয়েকদিন আগে থেকে মুক্তামণির অবস্থা খারাপ হতে থাকে। তখন সে বলতো- ‘আমি যদি মারা যাই, আমাকে যেন দাদার কবরের পাশে দাফন করা হয়।’
মুক্তামণির বাবা ইব্রাহিম গাজী বলেন, মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে মেয়ের জ্বর এসেছিল। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সামন্ত লাল সেনের সঙ্গে কথা বলি। তিনি সাতক্ষীরা সিভিল সার্জনের সঙ্গে কথা বলে ডাক্তার পাঠিয়ে দেন বাড়িতে। চিকিৎসকের দেয়া ওষুধ নিয়ে আসি। দুপুরে ও রাতে সেই ওষুধ খাওয়াই। মুক্তামণি রাতে একটা ছবেদা ফল খেয়েছিল। বুধবার সকালে কিছু খায়নি। মেয়েটি আমার হাতের ওপর মারা যায় ।
বুধবার সকাল ৮টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কামারবায়সা গ্রামের নিজ বাড়িতে মৃত্যু হয় মুক্তামণির।
দেড় বছর বয়সে মুক্তামনির ডান হাতের সমস্যা শুরু হয়। প্রথমে হাতে টিউমারের মতো হয়। ৬ বছর বয়স পর্যন্ত টিউমারটি তেমন বড় হয়নি। কিন্তু পরে তার ডান হাত ফুলে অনেকটা কোলবালিশের মতো হয়ে যায়।
মুক্তামনির রোগ নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল আলোচনা শুরু হয়। গত ১১ জুলাই তাকে ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। ১২ আগস্ট অপারেশন করে বড় একটি টিউমার অপসারণ করা হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে টানা ছয় মাস মুক্তামনির চিকিৎসা চলে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছিলেন।
টানা ছয় মাসের চিকিৎসায় খানিকটা উন্নতি হওয়ায় ২০১৭ সালের ২২ ডিসেম্বর মুক্তামনিকে এক মাসের ছুটিতে বাড়ি পাঠানো হয়। বাড়িতে যাওয়ার পর থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস