শুক্রবার, ০৪ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৫:৪১:৪৬

তদারকির অভাবে ধ্বংস হচ্ছে কয়েক হাজার খেজুর গাছ

 তদারকির অভাবে ধ্বংস হচ্ছে কয়েক হাজার খেজুর গাছ

সেলিম হায়দার, তালা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি: গ্রাম বাংলার কুয়াশার চাদর বিদীর্ণ করে শীতের সকালে চিক চিকে রোদে এক গ্লাস খেজুরের রসের স্বাদ না পেলে যেন সকালটাই বিফলে যায় চিরচেনা বাঙালীর। রসের পায়েস,পিঠা,গুড়সহ রসের সব বাহারী পশরার স্বাদতো আছেই। তবে এখন যেন সবকিছুই ইতিহাস হতে চলেছে। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রামীণ জনপদের ঐতিহ্যবাহী খেজুর গাছ। ইট ভাটা,টালি কারখানাসহ বিভিন্ন কোম্পানীগুলো তাদের পন্য উৎপাদনে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে ফেলেছে খেজুর গাছ গুলো। কোথাও কোথাও কিছু গাছের দেখা মিললেও গাছির সংকট রয়েছে প্রকট। খেজুর গাছ নিয়ে সার্বিক অবস্থা যখন এমন,তখন সাতক্ষীরার তালার সীমান্তবর্তী বিনেরপোতার ধান গবেষণাগারের প্রায় ৩শ’বিঘা জমির বাঁধের উপর দিয়ে এক পায়ে দাঁড়িয়ে আছে হাজার হাজার খেজুর গাছ। তবে অযতœ অবহেলা ও তদারকির অভাবে তাদের অবস্থাও যেন যায় যায়। বছরের পর বছর ধরে জনপদের ঐতিহ্যের ধারক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে তারা। অথচ একটু পরিচর্যা,রক্ষণা-বেক্ষণ ও রস উৎপাদনে তৎপর হলেই রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি সেখানে বসত প্রকৃতি প্রেমীদের মিলন মেলা। উৎপাদন হতো শত শত টন গুড়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট আমলা কর্মচারীদের সমন্বয়হীনতা ও সদিচ্ছার অভাবে পড়ে আছে ঐতিহ্যবাহী খেজুর বাগানটি। বিনেরপোতার ধান গবেষনা ইন্সটিউটের খেজুর বাগানটি এখন পরিনত হয়েছে মাদকসেবী ও অপরাধিদের অভয়ারণ্যে। অথচ সেদিকেও যেন খেয়াল নেই কারো। গতকাল পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে বাগানটির পাশদিয়ে যেতেই যেন আটকে যায় চোখ। ক্যামেরার আগেই বাগানটি আটকা পড়ে মনের ফ্রেমে। বলতে গেলে প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়ে তাকে নিয়ে দু’কলম লিখতে বসা। প্রায় কোয়ার্টার কিলোমিটার দৈঘ্যের ও কুড়ি মিটার প্রস্থের বাগানটিতে রয়েছে প্রায় দেড় হাজার খেজুর গাছ। খানিকটা দুরেই রয়েছে গবেষণা কেন্দ্রের আরো কয়েক’শ খেজুর গাছ। ঐ এলাকাতে আর কোন গাছ না থাকায় সেখানে শুধুমাত্র খেজুর গাছের ঘনত্ব এত পরিমানে বৃদ্ধি পেয়েছে যে,গাছে গাছে ঠাসা গাছগুলির পাতা মরতে শুরু করেছে। সময় এসেছে বাগানটির পরিচর্যায় এখনোই এগিয়ে আসুক কর্তৃপক্ষ। তাৎক্ষনিক এনিয়ে কথা বলতে সেখানকার প্রধান বৈজ্ঞানিক কৃষিবিদ ডঃ আজিজুল হকের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এসময় সেখানকার অন্যান্য কর্মচারীদের নিকট তার অবস্থান বা ফোন নাম্বারটি চাইলেও তারা দিতে রাজি হয়নি। এসময় বাগানটি নিয়ে কথা হয় স্থানীয় প্রদীপ সাহা, অনুপ মন্ডল,অসিম কুমার ও বিমল মন্ডলের সাথে। তারা বলেন এনিয়ে বহুবার গবেষণা কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের সাথে তাদের কথা হয়েছে,তবে ফল হয়নি। প্রকৃতি প্রেমী তালার সাধারণ মানুষের দাবী অচিরেই তদারকি করা হোক বাগানটির। নতুবা বিস্তীর্ণ জনপদের হারিয়ে যাওয়া লাখ লাখ খেজুর গাছের ন্যয় ভাগ্যাবরণ করতে হবে গবেষণা কেন্দ্রের গাছগুলিরও। ৪ ডিসেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে