সাতক্ষীরা : স্বামীর নির্যাতন আর শ্বশুরের কুপ্রস্তাবের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে খুন হোন তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ আঁখি বসু। সংবাদ সম্মেলনে এমনই দাবী করলেন গৃহবধূর মা জোছনা বসু।
বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেন জোছনা বসু। সংবাদ সম্মেলন গৃহবধূ আঁখি বসু বাবা যশোরের কেশবপুর উপজেলার স্কুল শিক্ষক গোবিন্দ চন্দ্র বসু উপস্থিত ছিলেন।
গৃহবধূ আঁখির বলেন, বখাটেদের অত্যাচারের মুখে আমার মেয়েকে কম বয়সে বিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু স্বামীর নির্যাতন আর শ্বশুরের কুপ্রস্তাবের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে তাদের আঘাত নিহত হয়েছে আমার তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে আঁখি বসু।
মা জোছনা বসু আকুতি জানিয়ে বলেন, আর কোন মেয়েকে যেনো এভাবে প্রাণ না দিতে হয়। আমি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই শ্বশুর এসকে বোস তার স্ত্রী অশোকা বোস ও ছেলে অরুপ কুমার বোসের।
গৃহবধূর বাবা গোবিন্দ চন্দ্র বসু তার লিখিত বক্তব্য বলেন, ২০১৭ সালে তার মেয়েকে বিয়ে দেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার এসকে বোসের ছেলে অরুপের সাথে। বিয়ের সময় স্বর্ণ ও নগদ টাকা দেওয়ার পরও অরুপ যৌতুক বাবদ বারবার টাকা চাইতো। টাকা দিতে না পারায় তাকে নির্যাতন করতো। এমনকি অরুপের বাবা এসকে বোস বিভিন্ন সময় তার ছেলের বউ আঁখিকে কুপ্রস্তাব দিতো। এতে আপত্তি করায় গত ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে আমার মেয়ে আঁখিকে হত্যা করে তার লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয় তার কক্ষের সিলিং ফ্যান।
তিনি জানান, তাকে হত্যার পর বাড়ির লোকজন ঘরে তালা ঝুলিয়ে নিজেদের পাসপোর্ট ও লাগেজ নিয়ে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করছিলো। জানতে পেরে গ্রামবাসী ওই পরিবারের লোকজন অবরুদ্ধ করে ফেলে। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। পরে আঁখির শ্বশুর-শাশুড়ি ও স্বামীকে জনরোষ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ গ্রেফতার করে।
বাবা গোবিন্দ বসু তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন। তিনি জানান, আঁখির গলায় ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিলো তারা। পুলিশের সুরতহাল রিপোর্টের বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন ঝুলন্ত দেখানো হলেও তার দুই পা পাতানো ছিল মেঝেতে। তার নাক দিয়ে ঝরছিলো বিষাক্ত ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি। তার গলায় ফাঁসির চিহ্ন মেলেনি। এমনি কি তার জিহবাও ছিল স্বাভাবিক। বুধবার লাশের ময়না তদন্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলন আকুতি জানিয়ে তারা বলেন ‘আমরা এই হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই’। সংবাদ সম্মেলন আরও উপস্থিত ছিলেন মেয়ের স্বজন প্রতিমা হালদার, অর্চনা বিশ্বাস, পার্থ বিশ্বাস, প্রতিবেশি গোপাল চন্দ্রসহ এলাকাবাসী।