জাকিয়া আহমেদ : ভারতের ব্যাঙ্গালুরুর একটি হাসপাতাল থেকে চার জন চিকিৎসক সাতক্ষীরা সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কেন আসছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সংশ্লিষ্টরা।
তাদের অভিযোগ, ভারতীয় চিকিৎসকরা এই হাসপাতালে কেন আসবেন এবং কী ধরনের সেবা দেবেন, সেই বিষয়টি পরিষ্কার না করেই বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) তাদের অনুমতি দিয়েছে।
একইসঙ্গে ওয়ার্কশপের জন্য রেজিস্ট্রেশনও দিয়েছে। অথচ সরকারি হাসপাতালে বিদেশি চিকিৎসক এসে ওয়ার্কশপ কিংবা সেমিনার করতে চাইলে তার জন্য কোনও রেজিস্ট্রেশনের প্রয়োজন নেই বলেও জানান তারা।
প্রসঙ্গত, বিএমডিসির নিয়ম অনুযায়ী, কোনও বিদেশি চিকিৎসক বাংলাদেশে রেজিস্ট্রেশন নিতে চাইলে তাকে পরীক্ষা দিতে হয়। যদি ওয়ার্কশপে অংশ নিতে চান, তাহলে তার ধরন জানাতে হয়।
আর তারা বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দিতে চাইলে, কোনও হাসপাতালে ‘প্র্যাকটিস’ করতে চাইলে বিএমডিসির অধীনে নির্দিষ্ট বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। এরপর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের সুপারিশসহ তাদের সব সনদ যাচাই করে বিএমডিসি অনুমতি দেয়।
কিন্তু ভারতের ব্যাঙ্গালুরু থেকে যে চার জন চিকিৎসক সাতক্ষীরা সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসছেন, তারা এ ধরনের কোনও পরীক্ষায় অংশ নেননি বলে অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চিকিৎসক বলেন, ভারতীয় চিকিৎসকরা নাকি কিছু ওয়ার্কশপ করবেন। কিন্তু দুই দিনের ওয়ার্কশপে তারা কী করবেন, সেটা জানানো হয়নি। আর ওয়ার্কশপ কিংবা সেমিনার করার জন্য কোনও রেজিস্ট্রেশনের প্রয়োজন নেই।
এই চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা। বিএমডিসির এ সংক্রান্ত নোটিশে দেখা যায়, আগামী ৩০ নভেম্বর ও ১ ডিসেম্বর ভারতের ব্যাঙ্গালুরুর একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে চার জন চিকিৎসক আসবেন।
চিকিৎসকদের সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি অ্যান্ড রাইটস। এ সংগঠনের উপদেষ্টা ডা. আব্দুন নূর তুষার বলেন, ‘সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে ভারতীয় চিকিৎসকরা আসবেন কেন? বিএমডিসি তাদের অস্থায়ী রেজিস্ট্রেশন দিয়েছে, কিন্তু কী কাজের জন্য, কীভাবে দিলো?’
চিকিৎসক নেতা ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান বলেন, ‘যেকোনও দেশের চিকিৎসকদের অস্থায়ী রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের সুপারিশ দরকার হয়।’
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ কাজী হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা এ সিদ্ধান্ত নেইনি। সাতক্ষীরা সদরের এমপিকে একটা গ্রুপ অ্যাপ্রোচ করেছিল। তারা বলেছিল যে গরিবদের ফ্রি সেবা দেবেন। তাদের অনুরোধ বিবেচনায় নিয়ে আমরা এই চিকিৎসকদের আনার উদ্যোগ নেই।’