সাতক্ষীরা থেকে : সাতক্ষীরায় ব্যাগের মধ্যে কুড়িয়ে পাওয়া সেই শিশুর দত্তক পেয়েছেন এক শিক্ষক দম্পতি। উদ্ধার হওয়া নবজাতককে আদালতের মাধ্যমে দত্তক দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার বিকালে ওই নবজাতককে দত্তক দেওয়া হয় এক শিক্ষক দম্পতিকে। সাতক্ষীরা শিশু আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান এক রায়ে এই নির্দেশ প্রদান করেন।
আদালত শিশুটিকে ওই দম্পতির হাতে তুলে দেওয়ার জন্য কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সমাজসেবা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। এ সংক্রান্ত এটি চিঠিও পৌঁছেছে দত্তক গ্রহীতা তালা উপজেলার রাঢ়ীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিখা রাণী চৌধুরী ও তার স্বামী যশোরের সাগরদাঁড়ি কারিগরি ও বাণিজ্য মহাবিদ্যালয়ের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়র বরুন কুমার পালের হাতে।
গত ১০ দিন আগে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার একটি শশ্মানঘাটে বাজার করা পরিত্য'ক্ত ব্যাগ থেকে পথচারীরা ওই শিশুটিকে উ'দ্ধার করে। উপজেলা সমাজসেবা অফিস নবজাতক ছেলে শিশুর নাম রাখেন মহারাজ। আদালত তার পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেন, যে যেহেতু সদ্যজাত শিশুটিকে কালিগঞ্জের গোলখালি শ্মশানের কাছে একটি গাছে ব্যাগে ঝুল'ন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় সেহেতু শিশুটি হিন্দু সম্প্রদায়ের পরিবারের বলে অনুমিত হয়।
শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য আবেদন করা ২৯টি আবেদন পত্র থেকে যাচাই-বাছাই করে কেবলমাত্র আর্থিক অবস্থা বিবেচনা না করে সামাজিক ধর্মীয় ও অন্যান্য দৃষ্টিকোণ থেকে আদালত শিশুটির মঙ্গলার্থে উক্ত শিক্ষক দম্পতিকে দত্তক দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করলেন। শিশুটি এখনও হাসপাতালে রয়েছে। তার বয়স সবে দশ দিন। গত ৪ অক্টোবর সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের গোলখালি শ্মশানের কাছে একটি গাছে বাজার ব্যাগে দুই এক ঘণ্টা আগে ভূমিষ্ঠ হওয়া শিশুটিকে কে বা কারা ঝুলিয়ে রেখে যায়।
পথচারীরা শিশুটির কান্না শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সার্জিক্যাল ক্লিনিক ও পরে কালিগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করেন। কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান রাসেলের নেতৃত্বে গঠিত শিশু কল্যাণ বোর্ড শিশুটি গ্রহণের জন্য আবেদন আহ্বান করেন। শিশুটিকে দত্তক পেতে ২৯টি আবেদনপত্র আসে। এসব আবেদন শিশু কল্যাণ বোর্ড সাতক্ষীরা শিশু আদালতে পাঠায়। আদালত আজ সোমবার এক আদেশে শিশু 'মহারাজ'কে ওই শিক্ষক দম্পতির হাতে দত্তক হিসেবে তুলে দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। এখন থেকে তারাই হবেন তার পালক পিতামাতা।