সাতক্ষীরা : ধর্ম ত্যাগ করে বিয়ে করে এ কি পরিণতি হলো সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সুমি আক্তারের (২০)।
প্রেমের টানে দু'বছর আগে নিজ ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে প্রেমিক রুবেল শেখকে বিয়ে করেন উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়নের অমল সরকারের মেয়ে সুমি।
সেই বিয়ে টিকেছে মাত্র এক বছর। এরপর স্ত্রী সুমিকে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় রেখে অন্য মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যায় রুবেল। এরপর থেকেই রুবেল নিখোঁজ। রুবেলের বাড়ি তালা উপজেলার কানাইদিয়া গ্রামে।
ধর্ম ত্যাগ করার কারণে সুমি এখন তার বাবার বাড়িও ফিরতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে রুবেলের সংসারে থেকেই অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন তিনি।
শনিবার রাতে হঠাৎ সুমির পেটে ব্যথা হলে শাশুড়ি তাকে তালা হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের চিকিৎসক পরীক্ষা করে জানতে পারেন, সুমির গর্ভের সন্তান উল্টো অবস্থায় রয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব সিজার করতে হবে। এ খবর জানার পর শাশুড়ি হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান।
হাসপাতালে সিজার করার সরঞ্জামাদি ও সব সুবিধা থাকা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হন সুমি। সুমির পাশে আপনজন বলতে কেউ না নেই। তাই হাসপাতালের ফ্লোরে প্রসব বেদনায় ছটফট করছেন তিনি।
তার এ অবস্থা দেখে সহ্য করতে না পেরে পাশের অন্য রোগীরা ক্লিনিকে ভর্তি করার জন্য রোববার সন্ধ্যায় চাঁদা তুলছিলেন।
ঘটনাটি জেনে তালা প্রেসক্লাবের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহম্মেদকে অবগত করেন।
এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমিকে ক্লিনিকে নিয়ে সিজার করানোর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন। ঘটনাটি জানার পর হাসপাতালে আসেন উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার।
পরবর্তীতে সুমিকে তালা সার্জিক্যাল ক্লিনিকে ভর্তি করালে রাত ১২টায় পুত্র-সন্তান প্রসব করেন সুমি। নবাগত ছেলের নাম রাখা হয়েছে আলিফ।
চিকিৎসাধীন সুমি গণমাধ্যমকে জানান, আমার বিপদের সময় কেউই ছিল না। আপনজনরা পর হয়ে গেছে। যাকে ভালোবেসে ধর্ম ত্যাগ করে ঘর ছেড়েছিলাম, সে মানুষটাও নেই। আমার বিপদে যারা আমাকে সহায়তা করেছে, তাদের কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ।
এ ব্যাপারে তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ হোসেন বলেন, প্রেসক্লাব সভাপতি নজরুল ইসলামের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক হাসপাতাল ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলি। তাকে বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। মা ও শিশু দুজনেই সুস্থ আছেন।
১৮ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম