সিরাজগঞ্জ : মোবাইলে ভিডিও করায় সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার শিশুকল্যাণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা বিলকিছ আক্তারকে থাপ্পড় মেরেছেন একই ভবনে অবস্থিত রেলওয়ে কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম।
১৭ আগস্ট গত বুধবার সকালে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে এলাকার ছাত্রছাত্রী-অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
নির্যাতিত ওই শিক্ষিকা তাৎক্ষণিক এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন। এরপর জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
থানায় লিখিত অভিযোগ করার পর প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম বিভিন্ন লোক দিয়ে তাকে হুমকি দিচ্ছেন বলে ১৯ আগস্ট শুক্রবার বিকেলে মাছুমপুরস্থ ভাড়া বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন বিলকিছ আক্তার।
তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, শহরের রেল কলোনিতে একই ভবনে শিশুকল্যাণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও এসবি রেলওয়ে কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অবস্থিত। গত বুধবার সকালে ওই স্কুলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শোকসভার আয়োজন করা হয়। কিন্তু রেলওয়ে কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম শিশুকল্যাণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কক্ষ দু’টি তালা দিয়ে রাখেন।
বিলকিছ আক্তার বলেন, বিষয়টি দুজনের মধ্যে সুরাহা না হওয়ায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুস সালেককে জানানো হয়। তিনি তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এ সময় ওই স্থানের দৃশ্য সংরক্ষণে মোবাইলে ভিডিও করার চেষ্টা করি। এসময় আব্দুস সালাম রাগান্বিত হয়ে শিক্ষা অফিসারের সামনেই আমার গালে চড় মারেন।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি, জেলা প্রশাসক এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (রাজস্ব) বিষয়টি অবগত করা হলে তারা আইনি ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দেন। পরে তাদের পরামর্শ নিয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় একটি ডায়েরি করা হয়।
বিলকিছ আক্তার বলেন, থানায় অভিযোগ দাখিলের পর থেকে বিভিন্ন লোকজন দিয়ে আমাকে প্রাণনাশসহ চাকরিচ্যুত করার হুমকি দিচ্ছে।
বিলকিছ আক্তারের বাবা ছব্দের আলী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, চাকরি নেয়ার পর থেকেই আব্দুস সালাম তার মেয়েকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে। এ ঘটনায় সালামের লোকজন আপস করার জন্যও হুমকি দিচ্ছে।
তিনি বলেন, মেয়ের বিয়ের জন্য লোক এলে তাদের উল্টো-পাল্টা কথা বলে তাড়িয়ে দেন। এ অবস্থায় মেয়ে ও পরিবারের নিরাপত্তা এবং ওই ঘটনার জন্য প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
এদিকে প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম জানান, মোবাইলে ভিডিও করার সময় শুধু হাত দিয়ে তার মোবাইল সরিয়ে দিয়েছি। থাপ্পড় মারা হয়নি।
তদন্তকারী কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম গণমাধ্যমকে জানান, তদন্ত করে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। পরবর্তীতে তারাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
১৯ আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম