সুনামগঞ্জ থেকে : ৫ বছরের শিশুপুত্র তুহিনকে তার বাবা আবদুল বাছির হ'ত্যা করেছে- এ কথা বিশ্বাস করতে পারছেন না মা মনিরা বেগম। ১৮ দিনের সন্তান কোলে নিয়ে দ্বিতীয় সন্তান তুহিনের হ'ত্যার বিচার চান তিনি।
ছেলের নৃশং'স খু'নের পর বাকরুদ্ধ তুহিনের মা এখন বাবার বাড়িতে শয্যাশায়ী। মাত্র ১৫ দিন আগে এক কন্যাসন্তান জন্ম দেন তিনি। তুহিনের অপর দুই ভাই ও নবজাতক বোনকে নিয়ে কীভাবে চলবেন সেই প্রশ্নের জবাব খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি।
ছেলে হ'ত্যার বিচার চেয়েছেন এই হতভাগা মা। বুধবার বিকালে দিরাই (সুনামগঞ্জ) উপজেলার কেজাউরা গ্রামে তুহিনের মা মনিরা বেগমের সঙ্গে কথা হয়। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তুহিন আমাদের আদরের সন্তান। তাকে হ'ত্যায় তার বাবা জড়িত এ কথা বিশ্বাস করতে পারছি না, কিছুতেই মানতে পারছি না আমি।
মনিরা বেগম বলেন, আমার তিন ছেলে ও এক মেয়ে। এর মধ্যে তুহিন দ্বিতীয়। ১৮ দিন আগে আমার এক কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। দুই বছর বয়স থেকে তুহিন তার বাবার সঙ্গে ঘুমায়। কোনো দিন তুহিনকে মারধর করেননি তার বাবা। রোববার রাতে খেয়ে সন্তানদের নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি আমরা। রাত ১০টার দিকে ঘুম থেকে উঠে দেখি বাবার সঙ্গে ঘুমাচ্ছে তুহিন।
তিনি বলেন, ওটাই জীবিত তুহিনকে আমার শেষ দেখা। রাত আড়াইটার দিকে ঘরের দরজা খোলা দেখি। এরপর সবাই জেগে দেখি তুহিন নেই। তখন প্রতিবেশীদের ডাকা হয়। সকালে বাড়ির পাশে রাস্তায় একটি কদম গাছের ডালে তুহিনের ঝু'ল'ন্ত ম'রদেহ দেখতে পাই আমরা। এরপর তুহিনের ম'রদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সেই সঙ্গে তার বাবা ও চাচাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
মনিরা বেগম আরও বলেন, ‘আমি জানি না কে বা কারা আমার ছেলেকে হ'ত্যা করেছে। মানুষের কাছে শুনছি তুহিনকে তার বাবা হ'ত্যা করেছে। তবে আমি কারও কথা বিশ্বাস করতে পারছি না। যে তুহিন দুই বছর ধরে বাবার কোলে ঘুমাতো সে তুহিনকে ঘরের বাইরে নিয়ে কোলের ওপর হ'ত্যা করতে পারে না বাবা, এটি বিশ্বাস হয় না আমার।’
তুহিন হ'ত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অজ্ঞাত ১০/১২ জনকে আসামি করে দিরাই থানায় মামলা দায়ের করেছেন তুহিনের মা মনিরা বেগম। এই মামলায় তুহিনের বাবা আব্দুল বাছির, চাচা আব্দুল মুছাব্বির, জমসেদ, নাছির ও চাচতো ভাই শাহরিয়ারকে গ্রে'ফ'তার দেখায় পুলিশ।
প্রসঙ্গত, সোমবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের গচিয়া কেজাউড়া গ্রাম থেকে তুহিনের ম'রদেহ উদ্ধার করা হয়। সে গ্রামের আবদুল বছির মিয়ার ছেলে।
হ'ত্যা'কা'রীরা ধা'রা'লো অ'স্ত্র দিয়ে শিশুটির কান, গলা ও প্যানিশ কেটে পা'শ'বিক কায়দায় হ'ত্যা করে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছে। শিশুটির পেটে বিদ্ধ ছিল দুটি ধা'রা'লো ছু'রি। শিশুর ম'রদেহে বি'দ্ধ ছো'রা দুটির হাতলে সোলেমান ও সালাতুলের নাম লেখা ছিল।