দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন, শ্রীমঙ্গল থেকে : দেশে চা-শ্রমিকদের ভোটের অধিকার দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু, আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পিছিয়ে পড়া এই বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠীকে দিচ্ছেন খাদ্য সহায়তা। সরকারের দেওয়া এই খাদ্য সহায়তা পেয়ে আজ তারা বেজায় খুশি। মাথায় খাদ্যপণ্য নিয়ে হাসিমুখে বাড়ি ফিরছেন চা-শ্রমিকরা।
শত দুঃখ-কষ্ট ভুলে গিয়ে তাদের চোখেমুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের ছাপ। তবে আজ আর শুধু খাদ্য সহায়তাই নয়, অবহেলিত ও অনগ্রসর এ জনগোষ্ঠীর মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ, সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণ, পারিবারিক ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের আওতায় সরকার চা-শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। আর চলমান এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে একটু একটু করে বদলাতে শুরু করেছে চা-শ্রমিকদের জীবনমান।
জানা যায়, ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে চা-শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের বিষয়টি বলা হয়েছিল। ২০১২ সাল থেকে চা-শ্রমিকদের দেওয়া এই প্রতিশ্রুতি পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করছে সরকার। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে নেওয়া এই প্রকল্প সমাজসেবা অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়ন করছেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তারা।
মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী গত অর্থবছরে দেশের ২৯,৪৩৬ জন চা-শ্রমিককে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ৪২টি চা-বাগানের ৫,৮৬০ জন চা-শ্রমিক এ সহায়তা পাচ্ছেন। প্রতিটি শ্রমিক পরিবারকে মোট ৫ হাজার টাকার খাদ্যসামগ্রী তিন কিস্তিতে তিন মাসে দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে প্রতি কিস্তিতে থাকছে ১৫ কেজি চাল, ৩ কেজি মসুরের ডাল, ৫ কেজি আটা, ২ লিটার সয়াবিন তেল, ৫ কেজি আলু, ২টি সাবান ও শেষ কিস্তির সঙ্গে ১টি শাড়ি ও ১টি লুঙ্গি দেওয়া হবে।
গত ৩০ মে থেকে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ৪২টি চা-বাগানের ৫,৮৬০ জন চা-শ্রমিককে এই খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। সাতগাঁও চা-বাগানের শ্রমিক মালতি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের খাদ্য সহায়তা করায় আমরা খুশি। কারণ বছরে তিন মাস বাগানে কোনো কাজ না থাকায় শ্রমিকদের বেকার থাকতে হয়। এ সময় শ্রমিকরা সরকারের দেওয়া এই খাদ্য সহায়তায় চলতে পারে।
চা-বাগান অধ্যুষিত শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ এম এ শহীদ বলেন, বঙ্গবন্ধু এ দেশের গরিব-দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর যে স্বপ্ন দেখেছিলেন আজ তারই কন্যা শেখ হাসিনা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ধাপে ধাপে চা-শ্রমিকদের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। বাজেটে চা-শ্রমিকদের বরাদ্দ দ্বিগুণ করা হয়েছে। আগামী বছর তাদের জীবনমান উন্নয়নে ১৫ কোটি টাকা খরচ করা হবে। -বিডি প্রতিদিন
জুন, ২০১৭/এমটিনিউজ২৪ডটকম/এসবি