সিলেট থেকে: সিলেটে স্ত্রীর ওপর রাগ করে নিজ শ্যালককে চা বাগানের নির্জন স্থানে নিয়ে গলা টিপে হত্যা করেছে ঘাতক দুলাভাই। অবশেষে ঘাতক ওই দুলাভাইকে আটকের পর সে খুনের ঘটনা স্বীকার করে। পরে তার দেখানো স্থান থেকে ওই মাদ্রাসা ছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ওই মাদ্রাসা ছাত্রের নাম আল আমীন (১৭)। সে নগরীর টিকরপাড়া এলাকার টুটুল মিয়ার ছেলে। পারিবারিক সূত্র জানিয়েছেন, কয়েক বছর আগে আল আমীনের বড় বোন আয়েশা বেগমের সঙ্গে বিয়ে হয় সিলাম এলাকার লাল মিয়ার ছেলে ফয়সল আহমদের।
বিয়ের পর থেকে আয়েশার সঙ্গে ফয়সলের পারিবারিক বিরোধ দেখা দেয়। নানা সময় ফয়সল স্ত্রী আয়েশার কাছে যৌতুক চায়। যৌতুকের দাবিতে প্রায় এক মাস আগে আয়েশার সঙ্গে বিরোধ বাধে ফয়সলের। এই বিরোধের জের ধরে আয়েশা পিতার বাড়ি নগরীর টিকরপাড়ায় চলে আসে। এরপর থেকে আয়েশা স্বামীর বাড়ি যাচ্ছিল না। এ বিরোধের কারণে কয়েক দিন আগে আয়েশার ভাই আল আমীনের সঙ্গে ফয়সলের কথা কাটাকাটি হয়।
এ সময় ফয়সল শ্যালক আল আমীনকে মারধর করে। এদিকে শনিবার সকাল ১১টার দিকে ফয়সল শ্বশুরবাড়িতে এসে। বাড়ির ভেতরে না ঢুকে মোবাইল ফোনে আল আমীনকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিল আল-আমীন। শনিবার দিনভর আল আমীনকে খোঁজাখুঁজির পরও পাওয়া যায়নি। পরে সন্ধ্যার দিকে ফয়সলকে ডেকে নিয়ে আসা হয়। এ সময় ফয়সল ঘটনাটি অস্বীকার করে জানায়- সে আল আমীনকে দেখেনি। তার আচরণ রহস্য দেখা দেওয়ায় রাতে ফয়সলকে সিলেটের কোতোয়ালি থানা পুলিশের হাতে সোর্পদ করা হয়।
এদিকে- রাতভর জিজ্ঞাসাবাদকালে পুলিশের কাছে খুনের ঘটনা স্বীকার করেনি ফয়সল। তবে- লো দুই টার দিকে সে মুখ খুলে। শ্যালক আল আমীনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে খাদিমপাড়া চা বাগানের ভেতরে রেখে এসেছে বলে জানায়। তার কথামতো পুলিশ ফয়সলকে নিয়ে খাদিমপাড়া চা বাগানের পথে রওনা দেয়। কিন্তু বাগানে যাওয়ার আগেই ফয়সল পুলিশের কাছে স্বীকার করে আল আমীনকে সে হাত-পা বেধে গলা টিপে হত্যা করেছে। এরপর লাশ ফেলে এসেছে। পুলিশ তাকে নিয়ে ওই এলাকায় গিয়ে আল আমীনের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করে।
নিহতের মা পারভিন বেগম জানিয়েছেন- তার ছেলেকে মেয়ের জামাতা ফয়সল বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে খুন করেছে। তিনি এ ঘটনায় জামাতা ফয়সলের ফাঁসি দাবি করেন। সিলেটের কোতোয়ালি থানার ওসি গৌসুল হোসেন জানিয়েছেন- ফয়সলকে রাতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে মুখ খুলেনি। গতকাল দুপুরে প্রথমে সে আল আমীনকে নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে। পথিমধ্যে খুনের ঘটনা স্বীকার করে। তিনি বলেন, স্ত্রী আয়েশার উপর ক্ষুব্ধ হয়ে ফয়সল শ্যালক আল আমীনকে খুন করেছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে। এ ঘটনায় নগরীর কুয়ারপাড় টিকরপাড়া এলাকায় শোকের মাতম চলছে। আল আমীন স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ক্বারীয়ানার ছাত্র ছিল। তার পিতা টুটুল মিয়া কাপড় ব্যবসায়ী।-এমজমিন
এমটি নিউজ/এপি/ডিসি