 
                                        
                                        
                                       
                                        
                                             
                                                                                    
সিলেট থেকে : শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর হামলাকারীর নাম ফয়জুর রহমান ওরফে ফয়জুল (২৪)।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী কুমারগাঁওয়ের শেখপাড়ার বাসিন্দা ফয়জুর রহমান। তার মূল বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই। ঘটনার পরপরই শেখপাড়ার বাসাটি তালাবদ্ধ করে ফয়জুলের পরিবারের সদস্যরা চলে গেছেন।
শনিবার সন্ধ্যায় শেখপাড়ার বাসাটিতে গিয়ে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাদের বাসাটি তালাবদ্ধ। কুমারগাঁও বাসস্টেশনের দুজন প্রত্যক্ষদর্শী ফয়জুলের পরিবারের সদস্যদের একসঙ্গে চলে যেতে দেখেছেন। তারা কোথায় যাচ্ছেন জানতে চাইলে বলেন, ‘মেডিকেলে যাচ্ছি।’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফয়জুল মাদ্রাসা শিক্ষার্থী বলে এলাকায় পরিচয় দিতেন। তবে কোন মাদ্রাসায় পড়েন-এ বিষয়ে এলাকার কেউ জানাতে পারেননি। ফয়জুলের বাবা আতিকুর রহমান সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের পার্শ্ববর্তী টুকেরবাজারে একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। রাত নয়টার দিকে আতিকুরের মোবাইলে ফোন দিলে ওপাশ থেকে কেউ ফোন ধরেননি। এরপর ফোন দিলে মোবাইল বন্ধ পাওয়া গেছে।
শনিবার বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে শাবি ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটেছে। বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চে ত্রিপল-ই বিভাগের এক অনুষ্ঠানে তাকে পিছন দিক থেকে মাথায় ছুরিকাঘাত করে ওই যুবক।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী প্রয়াশ রায় বলেন, ঘটনার সময় আমরা স্যারকে ধরতে গেলে স্যার বলেন- আমার কিছু হয়নি। পরে হামলাকারীকে গণধোলাইয়ের খবর শুনে স্যার বলেন- না না, ওই ছেলেকে তোমরা মেরো না।
হামলার পরপরই হামলাকারী যুবককে আটক করা হয়। তাকে গণপিটুনি দেন শিক্ষার্থীরা। গণপিটুনিতে গুরুতর আহত হয় ওই হামলাকারী।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আয়োজনে ‘ইইই ফেস্টিভ্যাল’ চলছে। আজ ছিল রোবটিক প্রতিযোগিতা। বিকেল পাঁচটার দিকে মঞ্চে বসে অনুষ্ঠান উপভোগ করছিলেন জাফর ইকবাল। আচমকা এক যুবক মঞ্চের পেছন থেকে এসে জাফর ইকবালের মাথায় ছুরিকাঘাত করে। পুলিশ তার পাশেই ছিল, কিন্তু তারা এগিয়ে আসেনি। তবে জাফর ইকবালের পাশে থাকা কয়েকজন শিক্ষক এই যুবককে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওই যুবককে ধরে পিটুনি দেয়। আর শিক্ষকেরা জাফর ইকবালকে মাইক্রোবাসে করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, হামলার পরপরই হামলাকারী যুবককে আটক করা হয়। তবে তিনি মরার মতো পড়ে আছেন। কোনো কথারই জবাব দিচ্ছেন না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর জাহিদ হাসান জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান চলাকালে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
জাফর ইকবালের বর্তমান অবস্থা নিয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, যেহেতু মাথায় আঘাত তাই এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। মাথা থেকে রক্ত ঝরেছে।
এমটিনিউজ/এসএস