সিলেট থেকে : সিলেটে গত ৫ দিনে হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ঘুরে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে মারা গেছেন ৩ জন। এই ঘ'টনাগুলোর রেশ এখনও কাটেনি, এরই মাঝে এবার সিলেটের ৪ চার হাসপাতালে ভর্তি হতে না পেরে নি'র্ম'ম পরিণতি মেনে নিতে হলো এক আওয়ামী লীগ নেতার স্ত্রীকে।
মৃ'ত্যুবরণকারী মহিলা সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কুচাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আখতার হোসনের স্ত্রী। তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্টে ভু'গছিলেন। জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কুচাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আখতার হোসনের স্ত্রীর বুকে প্র'চ'ণ্ড ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।
স্ত্রীকে নিয়ে আখতার হোসেন দক্ষিণ সুরমার নর্থ-ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন। সেখানের কর্তব্যরত ডাক্তার তার স্ত্রীকে দুইটি টেস্ট দিয়ে ভর্তি না করে বাসায় পাঠিয়ে দেন। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, ''টেস্টগুলোর রিপোর্ট আসার পরে রোগীকে নিয়ে আগামীকাল (শুক্রবার) আসবেন। প্রয়োজনে কাল ভর্তি করবো।''
এদিকে, গতকাল শুক্রবার ভোরেই রোগীর শারীরিক অবস্থার অব'নতি ঘটে। তখন স্বামী আখতার হোসেন নর্থ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে আসেন এবং সেখানে তার স্ত্রীকে ভর্তি করাতে চান। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে 'সিট নেই' অজুহাতে ভর্তি করেনি। পরে আখতার হোসেন গতকাল দুপুর পর্যন্ত একে একে সিলেট নগরেরর পার্ক ভিউ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, 'করোনা হসপিটাল' খ্যাত শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতাল ও ইবসে সিনা হাসপাতালে চেষ্টা করে স্ত্রীকে ভর্তি করাতে পারেননি আখতার হোসেন।
এ হসপিটালগুলোর কর্তব্যরতদের প্রায় একই বক্তব্য ছিল, ''যেসব টেস্ট দেয়া হয়েছে- সেগুলোর রিপোর্ট নিয়ে আসুন। তারপরে দেখবো ভর্তি করা যায় কি-না।'' পরে আখতার হোসেন বাধ্য হয়ে প্রতিবেশী এক নার্সের সহযোগিতায় প্রায় ২০ হাজার টাকা দিয়ে একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনে বাড়িতে নিয়ে স্ত্রীকে দেয়া শুরু করেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা না পেয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্বামী-সন্তান ও প্রিয়জনদের ছেড়ে পরপারে পাড়ি জমান আখতার হোসেনের স্ত্রী।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, আমরা বড় অসহায়। জীবন-মৃত্যুর স'ন্ধিক্ষ'ণে দাঁড়িয়ে আমরা যদি স্বাস্থ্যসেবা না পাই, তবে এই শহরে এতো উন্নত হসপিটালগুলো দিয়ে কী হবে? তিনি এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে ক'ঠো'র পদক্ষেপের দাবি জানান।