মৌলভীবাজার থেকে : ব্রিটিশ আমলে হতে চা বাগানে দেশি মদ তৈরি ও সেবনে শুরু হয়। চা বাগানে লাইসেন্স দিয়ে মদ সেবনের দোকান বা পাট্রা অনুমোদন থাকলেও এখন লেবার লাইনে অবৈধভাবে নিজস্ব পদ্ধতি ঘরে ঘরে তৈরি করা হচ্ছে চোলাই মত। অবাধে পাট্রা গড়ে দিনরাত মাদক সেবনে লিপ্ত হতদরিদ্র চা জনগোষ্টির ৫০ শতাংশ চা শ্রমিক।
পুলিশ মাঝে মধ্যে অভিযান চালালেও চোলাই মদের ব্যবসা বন্ধ করতে পারছে না। চা শ্রমিকদের সচেতন করতে নানা সভা সমাবেশ করেছে পুলিশ। তারপরও বন্ধ হচ্ছে না চোলাই মদ। এক পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়য, কমলগঞ্জের বিভিন্ন চা বাগানে অভিযান চালিয়ে গত ৮ মাসে প্রায় ১০০০ হাজার লিটার চোলাই, ৯৫ লিটার ওয়াশ, ১০০ লিটার জাওয়া ও ২০ লিটার স্প্রিট উদ্ধার করা হয়। এসব ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ১০জনকে আটক করে পুলিশ।
কমলগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি চা-বাগান ঘুরে জানা যায়, চা-বাগানগুলোতে ব্রিটিশ আমল থেকেই নিজস্ব পদ্ধতিতে চোলাই ও হাড়িয়া তৈরির পর তা পান করেন শ্রমিকরা। তবে ধীরে ধীরে কিছু কিছু শ্রমিকের সন্তানরা শিক্ষিত হচ্ছেন। এতে সচেতনতা তৈরির ফলে মাদক পানকারীর সংখ্যা কমছে। তারপরও ৫০ শতাংশ পুরুষ শ্রমিক এখনো এসব মদ পান করেন। প্রতি গ্লাস মদ ২০ টাকা হারে বিক্রি করা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চা-বাগানের একজন শ্রমিক নেতা বলেন, চা-বাগানে যে কি পরিমাণে শ্রমিকরা মাদকাসক্ত হয়ে বিশৃঙ্খল জীবনযাপন করছে সেটি বলতে আমাদের লজ্জা হয়। ৫০ শতাংশ পুরুষ শ্রমিক সারাদিন পরিশ্রম করে যে টাকা পায় তা মদ পান করেই শেষ করে দেয়। ফলে শ্রমিকদের শারীরিক নানা সমস্যা ও পরিবারে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
কানিহাটি চা বাগানের স্থানীয় ইউপি সদস্য সীতা রাম বিন জানান, চোলাই মদ বন্ধের ব্যাপারে তিনি সব সময় স্বোচ্চার। পুলিশের সহযোগিতায় তার বাগানে অবেধ মদ বন্ধের চেষ্টা করেছেন একাধিকবার। কিছু দিন বন্ধ থাকার পর আবার ব্যবসা শুরু হয়। কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান জানান, মাদক বন্ধে পুলিশ কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। চা-বাগানেও মাদকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। মামলাও দেওয়া হয়।