পঞ্চম ধাপে সিলেটের দুই উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে জকিগঞ্জ উপজেলার কাজলসার ইউনিয়নে নির্বাচন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জালিয়াতির অভিযোগে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং রিটার্নিং অফিসারকে আটক করা হয়েছে। স্থগিত করা হয়েছে পুরো ইউনিয়নের ভোটগ্রহণ। এছাড়া ব্যালট বাক্স ছিনতাইর ঘটনায় আরেক ইউনিয়নের একটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়।
জানা গেছে, বুধবার জকিগঞ্জ উপজেলার কাজলসার ইউনিয়নের ৪টি কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যার চেয়ে কম ব্যালট পাঠান উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। প্রয়োজনীয় সংখ্যক ব্যালট না পেয়ে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা ব্যালট গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। এরপর তারা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবগত করেন। দুপুরের মধ্যে ৩টি কেন্দ্রে অবশিষ্ট ব্যালট পেপার পৌঁছালেও মরিচা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বেলা ১টা পর্যন্ত অবশিষ্ট ব্যালট পেপার পৌঁছায়নি।
এসময় গোয়েন্দা সংস্থা ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ওই ইউনিয়নের রিটার্নিং অফিসার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুল হকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, তিনি নিজে ব্যালট পেপার নিয়ে যাচ্ছেন। কেন্দ্রে যাওয়ার পর আরিফুর রহমানের গাড়ি থেকে নৌকায় সিল মারা চেয়ারম্যান পদের ৪শ’ ব্যালট ও সমানসংখ্যাক পুরুষ ও নারী সদস্যের ব্যালটে সিলমারা ব্যালট উদ্ধার করা হয়। এরপর পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন তাকে আটক করেন। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক এম. কাজী এমদাদুল ইসলামসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জকিগঞ্জে ছুটে যান। আরিফুল হকের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী জালিয়াতির ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাদমান সাকিবকেও আটক করা হয়। আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন। নির্বাচনে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জালিয়াতির ঘটনায় বিকেল ৩টার দিকে কাজলসার ইউনিয়নের ভোট স্থগিত করা হয়।
এদিকে, বুধবার বিকেল সোয়া ৩টার দিকে জকিগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের গণিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকার সমর্থকরা ঢুকে ৩টি ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নেন। পরে বাক্স ভেঙে কিছু ব্যালট পানিতে ফেলে দেয়া হয় এবং কিছু পুড়িয়ে দেয়া হয়। ফলে ওই কেন্দ্রের ভোটও স্থগিত ঘোষণা করেন প্রিসাইডিং অফিসার। -বাংলাদেশ প্রতিদিন