রাহিব ফয়ছল, সিলেট প্রতিনিধিঃ জানুয়ারি ২৭ তারিখ থেকে বাংলাদেশে পর্দা ওঠছে অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের। ১৬ দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এই বিশ্বকাপের ভেন্যুর তালিকায় আছে সিলেটের দুই স্টেডিয়ামও। সিলেট বিভাগীয় আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ৩টি এবং সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে হবে বিশ্বকাপের ২টি ম্যাচ। ২৮, ৩০ ও ১ ফেব্রুয়ারি ম্যাচগুলো হওয়ার কথা রয়েছে।
২৮ জানুয়ারি দুটি ম্যাচ দিয়ে অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সিলেট পর্বের সূচনা হবে। সিলেট বিভাগীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে লড়াইয়ে নামবে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান এবং সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কা ও কানাডা। ৩০ জানুয়ারি বিভাগীয় স্টেডিয়ামে খেলবে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান এবং জেলা স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে কানাডা ও পাকিস্তান। বিশ্বকাপের সিলেট পর্বের শেষদিন, ১ ফেব্রুয়ারি সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামে লড়াইয়ে নামবে আফগানিস্তান ও কানাডা।
বিশ্বকাপের এই ডামাঢোলের জন্য পুরোদমে প্রস্তত হয়ে আছে সিলেট। সিলেটের দুটি ভেন্যুর প্রস্তুতিই প্রায় চূড়ান্ত। টুকটাক কিছু কাজ ছাড়া আনুষাঙ্গিক অন্যান্য সংস্কার কাজ প্রায় শেষ করা হয়েছে। গত মাসে আইসিসি’র টুর্নামেন্ট ম্যানেজার ক্রিস টেটলির নেতৃত্বে একটি দল সিলেট বিভাগীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম ও সিলেট জেলা স্টেডিয়াম পরিদর্শন করে। আইসিসি’র পরিদর্শক দল স্টেডিয়াম দুটির পিচ, গ্যালারি, আউটফিল্ডসহ অন্যান্য আনুষাঙ্গিক বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করে। তারা উভয় স্টেডিয়ামের প্রস্তুতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে বিসিবি সংশ্লিষ্টদের কিছু পরামর্শ প্রদান করে।
সিলেট বিভাগীয় আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে এর আগেও বড় ধরনের টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে। আইসিসি টি-২০ বিশ্বকাপের কয়েকটি ম্যাচ সফলভাবে সম্পন্ন হয় সেখানে। পূর্ব অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবারও চমকপ্রদ আয়োজেন প্রস্তুত বিভাগীয় স্টেডিয়াম। তার সাথে যুক্ত হয়েছে সিলেট স্টেডিয়াম।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আইসিসি এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসক্রিপশন মেনেই সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়াম ও জেলা স্টেডিয়ামে সংস্কার কাজ করা হয়েছে। প্রায় বছরখানেক ধরে বিভাগীয় স্টেডিয়ামকে নিরবিচ্ছিন্নভাবে প্রস্তুত করতে কাজ করেছেন গ্রাউন্ডস কর্মীরা। অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে সিলেট বিভাগীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নতুন ২টি পিচসহ ৭টি আন্তর্জাতিক মানের পিচ তৈরী করা হয়েছে। বৃষ্টি হলে অতিদ্রুত যাতে পানি নিষ্কাশন হয়, সেজন্য অত্যাধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এদিকে সরেজমিনে সিলেট জেলা স্টেডিয়াম ঘুরে দেখা যায়, স্টেডিয়ামে সাজ সাজ রব চলছে। পুরোদমে প্রস্তুত রয়েছে ম্যাচ পিচ, অনুশীলন পিচ, গ্রাউন্ডস। বিসিবি’র পিচ কিউরেটর গামিনি ডি সিলভার তত্ত্বাবধানে পিচ তৈরী করা হয়েছে। উন্নতির ছোঁয়া লাগছে প্রেসবক্সে। ঝকঝকে করে রাখা হয়েছে গ্যালারি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পাশাপাশি বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট বোর্ডও স্টেডিয়াম দুটির প্রস্তুতি কাজে অর্থায়ন করছে।
সিলেটের দুটি ভেন্যুর প্রস্তুতি বিষয়ে বিসিবি’র পরিচালক শফিউল আলম নাদেল চৌধুরী বলেন, ‘সিলেটের দুটি ভেন্যুই আইসিসি অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত। আনুষাঙ্গিক যে কাজগুলো বাকি রয়েছে, তা দ্রুত শেষ করা হচ্ছে।’
সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহি উদ্দিন সেলিম বলেন, ‘প্রথমবারের মতো জেলা স্টেডিয়াম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যুর মর্যাদা পাচ্ছে। এজন্য এই স্টেডিয়াম পুরোদমে প্রস্তুত হচ্ছে। ইতোমধ্যেই সিংহভাগ কাজ শেষ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান ও বিসিবি পরিচালক মোহাম্মদ হানিফ ভূঁইয়া বলেন, ‘অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের জন্য সিলেট প্রস্তুত রয়েছে। বিশেষ করে সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামের পিচগুলো অত্যন্ত ভালোমানের। ভবিষ্যতে সিলেটে আরো বড় ধরনের টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হবে।’
১৭ জানুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এইচএস/কেএস