ওয়েছ খছরু: কানাডিয়ান বধূ সিলারাকে নিয়ে স্বপ্নের জাল বুনেছিলেন সিলেটের যুবক সায়েক আহমদ খান। তিনি স্ত্রী সিলারাকে ভালোবাসতেন মনেপ্রাণে। এ কারণে সিলারার কথা বিশ্বাস করে দুবাই’র পর্ব শেষ করে তিনি দেশে চলে আসেন। এই সিলারা এখন তার জীবনের হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। যতই সায়েক প্রিয়তম স্ত্রী সিলারাকে কাছে পেতে চাচ্ছেন ততই দেয়া হয়েছে আঘাতের পর আঘাত। আর ওদিকে স্ত্রী সিলারা স্বামী সায়েককে দেশে রেখেই কানাডায় পর-পুরুষের সঙ্গে ফুর্তি করে বেড়াচ্ছেন। করছেন ‘বিয়ে-বিয়ে’ নাটকও। একের পর এক পুরুষের বাহুতে বন্দি হয়ে পড়ায় সিলারার আত্মীয়স্বজন সহ সবার সঙ্গে সম্পর্কেরও ছেদ ঘটেছে। কানাডিয়ান বধূ সিলারা বেগমের বয়স এখন ৩৬ বছর। তার বাড়ি সিলেটের বিয়ানীবাজারে। জন্ম পড়ালেখা তার নিজ এলাকাতেই। প্রাপ্ত বয়স্কা হওয়ার পর পিতৃহারা সিলারাকে বিয়ে দেয়া হয় আত্মীয় আবদুল মোছাব্বীর চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি কানাডা প্রবাসী। সিলারার বয়স থেকে বয়স একটু বেশি।
এরপরও সিলারার ভবিষ্যৎ চিন্তা করে তাকে বিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের পর আবদুল মোছাব্বিরের সঙ্গে ভালো চলে তার সংসার। এরপরও সিলারা স্বামী মোছাব্বিরের হাত ধরেই পাড়ি দেন কানাডায়। সেখানে যাওয়ার পরও কিছুদিন তাদের সংসার ভালোই চলছিল। কিন্তু কানাডায় সিলারার বেপরোয়া আচরণ এক সময় তাকে সংসার ত্যাগী করে তোলে। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, কানাডায় যাওয়ার পর সিলারার একাধিক বন্ধু জুটে। এই বন্ধুদের অনেকেরই বাড়ি গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার এলাকায়। পারিবারিক গণ্ডি থেকে ওদের সঙ্গে পরিচয়ের সূত্র ধরে সিলারার সঙ্গে পরিচয় হয় কয়েকজন যুবকের। এরপর থেকে সিলারা কানাডায় বেপরোয়া জীবন শুরু করে। এমনকি একেক সময় একেক যুবকের সঙ্গে পরকীয়ায় মেতে ওঠে। এসব কারণে সিলারার স্বামী আবদুল মোছাব্বিরের পরিবারের সঙ্গে তার বিরোধ বাধে। আর ওই বিরোধের এক পর্যায়ে সিলারা স্বামী মোছাব্বিরের পুরুষত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। সাফ জানিয়ে দেন, ওই স্বামীর কাছে আমি সন্তুষ্ট নই।
এ কারণে তিনি কানাডায় লিগ্যালিটি পাওয়ার পর ডিভোর্স চান। মান-সম্মানের ভয়ে এক সময় মোছাব্বির চৌধুরী সিলারাকে ডিভোর্স দেন। আর ওই ডিভোর্সের সময় তিনি নগদ ১৫ লাখ টাকাও পরিশোধ করেন সিলারাকে। কানাডায় সিলারার নিকট আত্মীয়দের মধ্যে কেউ নেই। যারা আছেন তারা গ্রামের কিংবা এলাকার পরিচিত জন। কানাডায় সিলারা প্রায় ৫ বছর কাটিয়েছেন আত্মীয় নামধারী একজনের বাসায়। আর ওই বাসায় থাকাকালীন তিনি একাধিক পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়েন। কখনো কখনো তিনি এসব পুরুষদের সঙ্গে অভিসারে চলে যেতেন। এ কারণে সিলারার কানাডার জীবন-যাপন নিয়ে স্বস্তিতে ছিলেন না দূরসম্পর্কের আত্মীয়রা। আর সিলারার এই বেপরোয়া জীবন নিয়ে চিন্তিত ছিলেন দেশে থাকা বোন মিলন বেগম ও রাজু বেগম।
এ কারণে গত বছর যখন সিলারা দেশে আসে তখন বিয়ের কথা জানিয়েই দেশে আনা হয়েছিল। এর আগে কানাডার মন্টিল শহরের বাসিন্দা তাজউদ্দিনের সঙ্গে সিলারার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এবং বিয়ে হওয়ার কথাবার্তাও চূড়ান্ত ছিল। কিন্তু সিলারা কানাডায় অস্থায়ী ভাবে বসবাসকারী তাজউদ্দিনের কাছে বড় অঙ্কের টাকা দাবি করে। এরপর তাজউদ্দিন সিলারাকে ফেলে অন্য শহরে পাড়ি জমিয়েছিল। এরপর গত বছর যখন সিলারা দেশে এসে সায়েককে বিয়ে করে ফের কানাডা যায় তখন তাজউদ্দিন আবার ফিরে আসে সিলারার কাছে। গত রমজানে দেশ থেকে যাওয়ার পর থেকে তাজউদ্দিনের সঙ্গে রয়েছেন সিলারা। এমনটি দাবি করেছেন সিলারার দেশে থাকা স্বামীর স্বজনরা।
তারা জানিয়েছেন, তাজউদ্দিনের সঙ্গে থাকায় দেশে থাকা স্বামী সায়েক আহমদ খানের সঙ্গে সম্পর্কের ইতি ঘটাতে চাচ্ছেন সিলারা চৌধুরী। আর এ বিষয়টি ইতিমধ্যে সায়েক ও তার পরিবারের কাছে জানিয়ে দিয়েছেন সিলারা। সিলেটেই রয়েছেন সিলারার আরও দুই বোন। প্রায় এক বছর আগেই তাদের মধ্যস্থতায় বিয়ে দেয়া হয়েছিল সিলারাকে। ওই দুই বোনের মধ্যে ইতিমধ্যে একজন হচ্ছেন রাজু বেগম। রাজুর স্বামী নজরুল ইসলাম। সায়েককে নির্যাতনের ঘটনায় নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সিলারার আরেক বোনের বাড়ি বাগবাড়ি এতিমস্কুল পয়েন্টে। ওই বোনের নাম মিলন বেগম। সিলারার স্বামী সায়েককে নির্যাতনের পর থেকে স্ত্রীসহ পালিয়ে বেড়াচ্ছেন আবদুল আহাদ। সায়েকের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, সিলারা কানাডা থাকলেও সায়েককে তার পথের কাঁটা হিসেবে মনে করছে। এ কারণে সিলারার প্ররোচনায় দেশে থাকা বোন জামাই নজরুল ও আহাদ সন্ত্রাসী দিয়ে পিটিয়েছে সায়েককে।-এমজমিন
৯ জুন,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ