রাহিব ফয়ছল, সিলেট প্রতিনিধি: সিলেট নগরীর যানজট নিরসনে গ্রহণ করা হয়েছিলো উড়াল সড়ক (এ্যালিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে) নির্মান প্রকল্প। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের নির্দেশে সড়ক ও জনপথ বিভাগ এ প্রকল্প গ্রহণ করে। প্রকল্পের প্রস্তাবনাও পাঠানো হয় মন্ত্রনালয়ে। কিন্তু নির্ধারিত অর্থ ছাড় না পাওয়ায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন। একনেকে পাশ না হওয়ায় প্রকল্পটি এই সরকারের আমলে আর বাস্তবায়ন হচ্ছে না বলেই জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সম্প্রতি সাংবাদিকদের জানান, প্রাক্কলন ব্যয় বেশি ধরাতে আপাতত এ্যালিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ হচ্ছে না। তবে ভবিষ্যতে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সওজ সূত্রে জানা যায়, সিলেটে অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে নগরীর প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে যানজট। অপ্রস্তত সড়ক, নগরীর ভেতরের বিপনীবিতানগুলোর নিজস্ব পার্কিং প্লেস না থাকা, ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়া, গণপরিবহন না থাকা ও ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াসহ বিভিন্ন কারনে দিনদিন মারাত্মক আকার ধারন করছে যানজট। তাই যানজট নিরসনে ও সিলেট নগরীকে তিলোত্তমা নগরীতে পরিণত করতে অর্থমন্ত্রীর নির্দেশে সওজ গ্রহণ করে মহাপরিকল্পনা। এই মহাপরিকল্পনার অন্যতম ছিলো নগরীতে উড়াল সড়ক নির্মাণ। এ প্রকল্পটি অর্থমন্ত্রীর নির্বাচনী ইশতেহারে ‘আলোকিত সিলেট’ গড়ার পরিকল্পনায়ও ছিল।
সিলেট সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) জানায়, প্রাথমিক সার্ভে করে নগর উন্নয়ন ও যানজট নিরসনে ৯শ’ ২৬ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণে ২০ টি প্রকল্প প্রস্তাব আকারে অর্থমন্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হয়। এই প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিলো উড়াঅল সড়ক (এ্যালিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে) নির্মাণ। এই প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৩শ’ ৬০ কোটি টাকা। নগরীর প্রায় ৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে উড়াল সড়ক নির্মানের প্রস্তাব করা হয় এ প্রকল্পে। নগরীর শেখঘাট পয়েন্ট থেকে শুরু করে ক্বিনব্রিজ হয়ে সিটি পয়েন্ট, কোর্ট পয়েন্ট থেকে জিন্দাবাজার এরপর চৌহাট্টা দিয়ে নগরীর আম্বরখানা অতিক্রম করে শেষ হবে উড়াল পথ, এমনই ছিলো পরিকল্পনা। ৩০ হাজার যান চলাচলে সক্ষম করে এই উড়াল সড়ক প্রকল্প তৈরি করা হয়। এছাড়া প্রকল্পে ছিল অতিরিক্ত যান চলাচলে দুই লেন’র প্রবেশ ও বহির্গমনের জন্য ৫টি ভায়োডাক্ট। এর মধ্যে ক্বিনব্রিজ এ্যাপ্রোচ, জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, বন্দরবাজার ও আম্বরখানা পর্যন্ত উড়াল সড়কের ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স ৫ দশমিক ৫০ মিটার ও হরিজেন্টাল ক্লিয়ারেন্স ২৬ মিটার।
২০১০ সালের শেষের দিকে ৯শ’ ২৬ কোটি টাকার এই প্রকল্পগুলো একনেকে উপস্থাপন করা হলেও পাশ হয় সাড়ে ৪ শ’ কোটি টাকা। বরাদ্দকৃত অর্থে নগরীর চারপাশে লিংক রোড স্থাপনের অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু প্রস্তাবিত প্রকল্পের জন্য টাকা না পাওয়াতে তা ফাইল চাপা পড়ে যায়।
সিলেট সড়ক ও জনপথ (সওজ)’র নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ মনিরুল ইসলাম বলেন, এ্যালিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে প্রকল্পটি এখনো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। টাকা পাওয়া গেলে এ্যালিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ের কাজ শুরু করা হবে।
৩০ জুন,২০১৬/এমটি নিউজ২৪/প্রতিনিধি/এইচএস/কেএস