সিলেট থেকে : নিখোঁজ তালিকায় সিলেটের ৯ জনের নাম উঠেছে। র্যাব এ তালিকা করেছে। এর মধ্যে কয়েক জন হারিয়ে যাওয়ার খবর জানিয়ে পুলিশের কাছে জিডি করা হয়েছিল। তবে, পুলিশ এখনও তালিকা প্রকাশ করেনি।
সিলেট মহানগর পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা তালিকা প্রস্তুত করছেন। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অধীনে থাকা ৬ থানা থেকে এ তালিকা করা হচ্ছে। শিগগির তালিকা চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
র্যাবের তালিকায় যাদের নাম প্রকাশিত হয়েছে তাদের অনেকেই মহানগরের বাইরে। সিলেট পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যাদের তালিকা করা হচ্ছে তারা সবাই যে জঙ্গি কিংবা সন্ত্রাসী ঘটনায় জড়িত তা নয়। এর মধ্যে অনেকেই রয়েছে প্রেমঘটিত কিংবা রাজনৈতিক ঘটনায় নিখোঁজ। তারা জামিন নিয়ে আর হাজিরা দেননি। কেউ কেউ প্রবাসে চলে গেছেন। যারা নিখোঁজ রয়েছেন তাদের অনেকেরই নাম পুলিশের খাতায় ওঠেনি।
তবে, সিলেটে হিজবুত তাহরীরের একটি শক্তিশালী ঘাঁটি রয়েছে। গত দুই বছরে সাংগঠনিক উগ্র কার্যক্রম চালাতে গিয়ে প্রায় ২৫ জন হিজবুত তাহরীরের কর্মী পুলিশ কিংবা র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিল। পরে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে তারা বাইরে চলে যায়। তাদের মধ্যে দু-একজন ছাড়া সবাই পলাতক রয়েছে। আদালতে নিয়মিত হাজিরা দিচ্ছে না।
এ ছাড়া, তারা এখন কোথায় আছে, কেমন আছে সে বিষয়টিও অজানা। সিলেট জেলা আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম জানিয়েছেন, সিলেটের আদালত জঙ্গিদের জামিনের ব্যাপারে কঠোর রয়েছে। কিন্তু অনেকেই উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে বের হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, জঙ্গিদের ব্যাপারে সিলেটের আদালত জামিনের বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে সমন্বয় করে। সিলেট মহানগর পুলিশের এডিসি (মিডিয়া) মো. রহমতুল্লাহ জানিয়েছেন, যারা জামিনে নিয়ে হাজিরা দেয়নি তাদের তালিকা হচ্ছে। তাদের সম্পর্কেও অনুসন্ধান চলছে। এ নিয়ে পুলিশ তালিকা প্রকাশেরও কাজ করছে। এদিকে, র্যাব ইতিমধ্যে ২৬১ জনের তালিকা প্রকাশ করেছে। এই তালিকায় বৃহত্তর সিলেটের ৯ জনের নাম প্রকাশ হয়েছে। এর মধ্যে সিলেটের কানাইঘাট, জকিগঞ্জে রয়েছে অনেকেরই বাড়ি। র্যাবের প্রকাশিত তালিকার ১৩১, ১৩২, ১৬৬, ১৮৫, ২২০, ২২২, ২২৪ ও ২৩৫ ক্রমিকের এই ৮ জন বৃহত্তর সিলেটের স্থায়ী বাসিন্দা।
এ ছাড়া ১৮৯ ক্রমিকে থাকা সাফির বাড়িও সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার পারকুল গ্রামে। তবে, তার জন্ম, বেড়ে উঠা সবই হয়েছে ঢাকায়। র্যাবের তালিকায় থাকা সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার কান্দলা গ্রামের মজম্মিল আলীর পুত্র শামীম আহমদ ২৭শে জুন চট্টগ্রামের পাহাড়তলির জেলার হাট মামুনের কলোনি থেকে নিখোঁজ হন। নিখোঁজের পর পরিবারের পক্ষ থেকে সিলেটের কোতোয়ালি থানার জিডি করা হয়। মো. তাজুল ইসলাম রমেলের বাড়িও কানাইঘাট উপজেলার ঝিংগাবাড়ি গ্রামে।
গত বছর ৬ই ডিসেম্বর চট্টগ্রামের পাহাড়তলির জেলার হাট মামুনের কলোনি থেকে নিখোঁজ হন। তার নিখোঁজের ঘটনায়ও সিলেটের কোতোয়ালি থানায় জিডি করা হয়েছে। মো. নাহিদুল ইসলাম ইমন হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার সুন্দাদিল কাজীবাড়ির বাসিন্দা মো. সোলেইমান মিয়ার পুত্র। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর থেকে সে নিখোঁজ হলে পরিবার থানায় জিডি করে। তামিম আহমেদ চৌধুরীর বাড়ি সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার বড়গ্রামে।
র্যাবের তালিকায় থাকা তাহমিদ রহমান সাফি একটি ইসলামী দেশ থেকে ভিডিও বার্তায় জঙ্গি হামলার হুমকিদাতাদের একজন। তিনি সাবেক নির্বাচন কমিশনার মরহুম মো. শফিউর রহমানের পুত্র। তার গ্রামের বাড়ি সিলেটের ওসমানীনগরে। ঢাকার খিলক্ষেত এলাকায় তাদের বাসা রয়েছে। নিখোঁজ মোসাজাদ হোসেনের বাড়ি দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার বীরগাঁও ইউনিয়নের শ্যামনগর গ্রামে।
সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার মো. ছাদিকুর রহমান জুবের উপজেলার শরীফগঞ্জ বাজারের অমলশীদ গ্রামের বাসিন্দা। আর সৈয়দ জাহাঙ্গীর মিয়ার বাড়ি জগন্নাথপুর উপজেলার ঈশানকোনা গ্রামে। তালিকায় থাকা মো. ছাদিকুর রহমান জুবের জকিগঞ্জ উপজেলার শরীফগঞ্জ এলাকার আমলশীদ গ্রামের মৃত আবদুল হান্নানের পুত্র। -এমজমিন
২১ জুলাই ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস