মঙ্গলবার, ০৯ আগস্ট, ২০১৬, ০১:৪৭:৫০

১৬ বছরের অনশন ভাঙছেন শর্মিলা

১৬ বছরের অনশন ভাঙছেন শর্মিলা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ১৬ বছরের অনশন ভাঙছেন ইরম চানু শর্মিলা। আজ মঙ্গলবার ইম্ফলের স্থানীয় আদালতে তার অনশন ভাঙার কথা রয়েছে। সমর্থকদের সামনে অনশন ভাঙবেন ইরম চানু শর্মিলা। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তারা শর্মিলাকে বাড়িতে অভ্যর্ত্থনা জানাতে প্রস্তুত।

গত মাসে অনশন প্রত্যাহার করে রাজনীতিতে প্রবেশ করার সিদ্ধান্ত জানান ইরম শর্মিলা। আদালতে তিনি বলেন, এবার থেকে অনশন নয়, রাজনীতির ময়দানে নেমে আফস্পা প্রত্যাহার নিয়ে তিনি লড়াই চালাবেন।

মণিপুরে সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ অধিকার আইন – আফস্পা কার্যকর থাকার বিরোধিতায় প্রায় ১৬ বছর ধরে অনশনে রয়েছেন ইরোম শর্মিলা। বিশ্ব ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘ এই অনশন ভেঙে নির্বাচনে আসার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, এবার তিনি সংসারও করবেন। আদালতে নিয়মিত হাজিরা দিতে গিয়ে তিনি বিচারককে তার এই ঘোষণার কথা জানিয়েছেন। তবে তার অনশনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এক সংগঠনের নেতা এই সিদ্ধান্তকে হতাশার প্রতিফলন বলে উল্লেখ করেছেন।

আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের তিনি জানান, অনশন ভাঙলেও তিনি ভিন্ন পন্থায় আন্দোলন এগিয়ে নেবেন। এতোদিন অহিংস অনশন আন্দোলনের মাধ্যমে তিনি রাজ্য বা কেন্দ্র সরকারের কাছ থেকে কোনও কিছুই আদায় করতে পারেননি। এবার অনশন ভেঙে আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনে অংশ নেবেন তিনি। পূর্ব ইম্ফলের খুরাই থেকে প্রার্থী হবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। শর্মিলা বলেন, ‘নির্বাচনেও আমার মোদ্দা একটাই, আফস্পা প্রত্যাহার।’

শর্মিলা বলেন, ‘আমি যদি নির্বাচনে হারি, মানুষ যদি আমায় গ্রহণ না করেন, ক্ষতি নেই। তবুও আর অনশনের রাস্তায় যাব না। ডেসমন্ডকে বিয়ে করব।’ আপাতত গোয়ার বাসিন্দা, ব্রিটিশ নাগরিক ডেসমন্ড কুটিনহোকে বিয়ে করতে চান তিনি।

দু’বছর আগে ডেসমন্ড তার সঙ্গে দেখা করতে এলে আদালত চত্বরে ও হাসপাতালের সামনে শর্মিলার সমর্থকরা তাকে মারধর করে তাড়িয়ে দেন। শর্মিলার পরিবারের বক্তব্য ছিল, আফস্পা-বিরোধী আন্দোলনকে দু্র্বল করতে ও শর্মিলার মনকে বিক্ষিপ্ত করতে এ সব সরকারি চক্রান্ত। শর্মিলা কানবা লুপের নেতা বাবলু লোইতংবাম অনশন সমাপ্তির সিদ্ধান্তকে ‘হতাশাজনক’ বলে মন্তব্য করেন। বাবলু বলেন, ‘চানু ঠিক কি করতে চাইছেন, তা কথা বলে বুঝতে হবে। হয়তো হতাশা থেকেই এমন সিদ্ধান্ত।’

উল্লেখ্য, ২০০০ সালে মণিপুরের মালোম গ্রামের বাসস্ট্যান্ডে সন্ত্রাসী সন্দেহে দশজন নিরীহ গ্রামবাসীকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে আসাম রাইফেলসের জওয়ানদের বিরুদ্ধে। কিন্তু আফস্পা কার্যকর থাকায় ওই সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে কোনও তদন্তও হয়নি। এর প্রতিবাদে ও আফস্পা আইন প্রত্যাহারের দাবিতে অনশন শুরু করেন চানু। প্রথমবার তিনি গ্রেফতার হন ২০০৬ সালে। জেল হেফাজতে হাসপাতালে থাকা চানুকে প্রতি ১৫ দিন পরপর আদালতে হাজিরা দিতে হয়। ১৬ বছরের দীর্ঘ এই অনশনের কালে ইরোম শর্মিলাকে নল দিয়ে বিশেষ প্রক্রিয়ায় খাবার দেওয়া হয়েছে। সূত্র: এনডিটিভি, আনন্দবাজার।
০৯ আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে