আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতীয় ইসলামিক প্রচারক ডাঃ জাকির নায়েকের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইসলামিক রিসার্চ ফার্মের (আইআরএফ) বিরুদ্ধে ‘ফরেন কনট্রিবিউশন রেগুলেশন অ্যাক্ট’ (এফসিআরএর) লঙ্ঘনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরপরই মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেয়।
মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ‘দ্য হিন্দু’ একথা জানিয়েছে। আর মঙ্গলবার মহারাষ্ট্র পুলিশ দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে বলে জানিয়েছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফাদনাবিশ সাংবাদিকদের বলেন, ‘মুম্বাই পুলিশ কমিশনার জাকির নায়েকের দুটি এনজিও’র তদন্ত প্রতিবেদন রাজ্য সরকারের কাছে জমা দেয়। সেখানে বেশ কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে। জাকির নায়েকের প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে বেশ কিছু অনৈতিক কাজের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘রাজ্য সরকার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। শিগগিরই কেন্দ্রীয় সরকারকেও জানানো হবে। এরপর প্রতিষ্ঠানটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
গুলশান হামলাকারীরা জাকির নায়েককে অনুসরণ করতেন-এমন অভিযোগের পর মহারাষ্ট্র পুলিশ প্রথম তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিল। সম্প্রতি দেশটির নিরাপত্তা সংস্থা জানায়, তিনি ভারতের সন্ত্রাসবাধীদেরকেও উৎসাহ দিচ্ছিলেন।
পিস স্কুলের বিতর্কিত কার্যক্রমের জন্য গতমাসে বাংলাদেশে পিস স্কুল ও টিভির সম্প্রচার নিষিদ্ধ করা হয়। ওসামা বিন লাদেনের পক্ষ নিয়ে জাকির নায়েক বলেছিলেন, ‘যদি তিনি (লাদেন) সন্ত্রাসবাদী হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রও সন্ত্রাসবাদী।’
‘প্রত্যেক মুসলমানেরই সন্ত্রসী হওয়া উচিত’ জাকির নায়েকের এই বক্তব্যটি ফেসবুকে শেয়ার করে রোহান। সে গুলশান হামলায় নিহত হামলাকারীদের একজন।
এফসিআরএ আইনের আওতায় ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন ও আইআরএফ এডুকেশনাল ট্রাস্ট নামে দুটি এনজিও’র নিবন্ধন করা হয়। গত এক দশকে এনজিও দুটি বিদেশ থেকে ১০ কোটি রুপি সহায়তা পেয়েছে। এর বেশিরভাগই এসেছে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে।
ইসলামের সেবা করার স্বীকৃতি স্বরূপ সৌদি বাদশা ফয়সাল আন্তর্জাতিক পুরস্কার-২০১৫ পান জাকির নায়েক।
মহারাষ্ট্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আইআরএফ এ তদন্তের জন্য আমরা নোটিশ পাঠিয়েছি। তারা এফসিআরএ আইন লঙ্ঘন করেছে কিনা, সেজন্য আমরা তাদের অ্যাকাউন্টের চেক বইগুলো দেখবো। কোনও অনিয়ম খুঁজে পেলে সংস্থা দুটির কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে। এছাড়া বিদেশি সব অনুদানের উৎস খুঁজে বের করা হবে। এ বিষয়ে তাদের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। তারা ঠিকমতো ব্যাখ্যা দিতে না পারলে এনজিও দুটির নিবন্ধন বাতিল করা হবে।’
কাতার, ওমান, কুয়েত, ইন্দোনেশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, সুইজারল্যান্ড, নিউজিল্যিান্ড, সিঙ্গাপুর, কেনিয়া ও নাইজেরিয়া থেকেও বিভিন্ন দাতা এ সংস্থায় অনুদান দিতেন। এছাড়া হংকংভিত্তিক একটি ধর্মীয় এনজিও তাদের অনুদান দিত। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এক ব্যক্তি ৯৩ লাখ রুপি অনুদান দিয়েছিল।
ইসলাম নিয়ে তার কথা বলার কারণে ফেসবুকে তার এক কোটি ৪০ লাখ এবং পিস টিভির ২০ কোটি ফলোয়ার রয়েছে।
১০ আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম