আন্তর্জাতিক ডেস্ক : হিটলার নেই, নেই তাঁর নাৎসি বাহিনীও। ২০১৬ সালে এসে অবশ্য হিটলারের নাৎসি বাহিনীর সাহায্য পাচ্ছে গোটা বিশ্বে ত্রাস ছড়ানো আইএস জঙ্গি গোষ্ঠী। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। কারণ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে মিশরের মরুভূমিতে নাৎসিবাহিনীর পুঁতে রাখা ল্যান্ডমাইন ব্যবহার করেই মারাত্মক বম্ব তৈরি করছে আইএস জঙ্গিরা। একই পদ্ধতি অবলম্বন করছে পশ্চিম এশিয়ার আরও কয়েকটি জেহাদি গোষ্ঠী।
গোটা বিশ্বে যে পরিমাণ ল্যান্ডমাইন রয়েছে, তার কুড়ি শতাংশই মিশরে রয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়। প্রায় ১৫৫০০ বর্গ মাইল এলাকা জুড়ে এই ল্যান্ডমাইন পোঁতা রয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলার সময়ে ১৯৪০ থেকে ১৯৪৩ সালের মধ্যে এই ল্যান্ডমাইনগুলি পোঁতা হয়েছিল। মিশরের বিস্তীর্ণ মরুভূমি এবং তার লাগোয়া এলাকায় সব মিলিয়ে দু’কোটিরও বেশি ল্যান্ডমাইন পোঁতা রয়েছে বলে মনে করা হয়। এর মধ্যে অধিকাংশ ল্যান্ডমাইনই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ব্রিটেনের বাহিনীকে কোণঠাসা করে, উত্তর আফ্রিকার দখল করার লক্ষ্যে জার্মান বাহিনী পুঁতেছিল।
সাম্প্রতিক এই রিপোর্টের দাবি, মিশরের মরুভূমিতে নাৎসি বাহিনীর পুঁতে রাখা এই বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরকই এখন কাজে লাগাচ্ছে আইএস-সহ অন্যান্য জঙ্গি গোষ্ঠীরা। কায়রো সামরিক এবং সরকারি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ল্যান্ডমাইনগুলি বার করার জন্য মরুভূমির বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে খোঁড়াখুড়ি শুরু করেছে আইএস জঙ্গিরা। মাটির নীচে পুঁতে রাখা ল্যান্ডমাইন বার করে তার ভিতরে থাকা উপকরণগুলি কাজে লাগিয়ে শক্তিশালী বম্ব এবং আইইডি জাতীয় বিস্ফোরক তৈরি করছে তারা।
এই প্রবণতা অবশ্য প্রথম শুরু হয়েছিল প্রায় ১২ বছর আগে। ২০০৪ সালে মিশরের ‘তাবা’য় এই ধরনের ল্যান্ডমাইন কাজে লাগিয়ে কট্টরপন্থীরা সাতটি বম্ব তৈরি করেছিল। পরে সেই বম্বগুলি দিয়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ৩৪জন সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হয়। তার পর থেকেই এই ল্যান্ডমাইনগুলির দিকে নজর যায় জঙ্গিদের।
জঙ্গিদের ঠেকাতে ১৯৮১ সাল থেকেই ল্যান্ডমাইনগুলি সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করে মিশর সরকার। ইতিমধ্যে প্রায় তিরিশ লক্ষ ল্যান্ডমাইন মাটির নীচ থেকে সরিয়েও ফেলা হয়েছে। বাকি ল্যান্ডমাইনগুলি আগামী তিন বছরের মধ্যে সরিয়ে ফেলা হবে বলে সরকারি আধিকারিকদের দাবি। কিন্তু, আইএস জঙ্গিরা যে তৎপরতার সঙ্গে মরুভূমির নীচ থেকে ল্যান্ডমাইন খুঁজে বার করছে, তাতে আগামী তিন বছরে কতগুলি ল্যান্ডমাইন অবশিষ্ট থাকবে, সেটাই এখন বড় উদ্বেগের বিষয়! এবেলা
১১ আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম