শুক্রবার, ১২ আগস্ট, ২০১৬, ১২:৫৩:২৮

দুর্ঘটনায় রক্তাক্ত ব্যক্তিকে বাঁচাল না কেউ, অথচ চুরি হল তাঁর মোবাইল!

দুর্ঘটনায় রক্তাক্ত ব্যক্তিকে বাঁচাল না কেউ, অথচ চুরি হল তাঁর মোবাইল!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: টেম্পোর ধাক্কা খেয়ে প্রায় এক ঘণ্টা রাস্তায় পড়ে ছিলেন ৪০ বছরের মানুষটি। রক্তাক্ত অবস্থায় ছটফট করছিলেন। আর অপেক্ষা করছিলেন কোনও সহৃদয় মানুষের জন্য। যে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাবে। অপেক্ষার অবসান হয়েছে। না, কেউ এগিয়ে এসেছেন বলে নয়। প্রাণবায়ুই যদি নিঃশ্বেষ হয়ে যায়, তাহলে আর অপেক্ষা কে করবে?

ভরা রাস্তায় পাশ দিয়ে হেঁটে চলেছেন একের পর এক 'মানুষ'। কেউ বাড়িয়ে দেয়নি সাহায্যের হাত। উপরন্তু কাতরাতে থাকা মাঝবয়সি লোকটির দিকে ফিরেও না তাকিয়ে, রাস্তায় পড়ে থাকা তাঁর মোবাইল ফোনটি চুরি করে নিয়ে যান একজন। দিল্লির রাস্তায় চরম অমানবিক এই ঘটনায় কেঁপে উঠেছে গোটা দেশ।

সিসিটিভ-র ফুটেজে ধরা পড়েছে সেই মর্মান্তিক ছবি। ই-রিকশাচালক মাটিবুল চার সন্তানের বাবা। রিকশা চালানোর পাশাপাশি সংসার চালানোর জন্য তিনি নাইট শিফটে এক জায়গায় পাহারা দেওয়ার কাজ করতেন।

সারারাত কাজ করে বাড়ি ফেরার সময় বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটায় দিল্লির সুভাষনগর এলাকায় মাটিবুলকে পিষে দিয়ে যায় একটি টেম্পো। দুর্ঘটনার পরই তিন চাকার ওই গাড়ির চালক গাড়ি থামিয়ে নেমে এলেও, এদিক-ওদিক তাকিয়ে ফোন নাড়াচাড়া করতে করতে দেখে নেন মাটিবুল বেঁচে আছেন। তাঁর বোধহয় এটুকুই জানার ছিল। ফের গাড়িতে উঠে চম্পট দেন তিনি।

এরপর রক্তাক্ত অবস্থায় প্রায় দেড় ঘণ্টা রাস্তার উপরেই পড়ে ছিলেন মাটিবুল। কেউ তাঁকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি। অথচ ঠিক যেখানে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে, তার থেকে ৫০০ মিটারের মধ্যেই রয়েছে হাসপাতাল।

দীর্ঘসময় পর পুলিশ এসে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। ডাক্তাররা জানান, অত্যধিক রক্তপাত হওয়ায় মৃত্যু হয়েছে মাটিবুলের।

সিসিটিভি-র ফুটেজে দেখা গিয়েছে, মৃতপ্রায় মাটিবুলের পাশ দিয়ে অনেকেই হেঁটে গেলেও, কেউ তাঁর দিকে ফিকে তাকায়নি। তবে, আর এক রিকশাচালকের যে কীর্তি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, তা আরও লজ্জাজনক।

দুর্ঘটনার সময় রাস্তায় ছিটকে পড়েছিল মাটিবুলের মোবাইল। এক রিকশাচালক মেটিবুলের পাশ থেকে সেই মোবাইলটি চুরি করে সেখান থেকে চম্পট দেন। তবু তাঁর একবারও মেটিবুলকে বাঁচানোর কথা মনে হয়নি।

বছর দশেক আগে পশ্চিমবঙ্গ থেকে কাজের সন্ধানে দিল্লি গিয়েছিলেন মাটিবুল। পুলিশ ঘাতক টেম্পোর চালক ও যে মাটিবুলকে সাহায্য না করে মোবাইলটি চুরি করে, তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে।-এই সময়

১২ আগস্ট, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে