গোটা গ্রামের লোক বধির, অবাক প্রশাসন!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ বছর বয়স হলেই লোপ পায় শ্রবণশক্তি! ভারতের মধ্যপ্রদেশের এক গ্রামে এমন আজব রোগের খবর পেয়ে চমকে গিয়েছিলেন সরকারি আমলারা৷ এমন আবার হয় নাকি? রহস্য উদ্ধার করতে রীতিমতো তদন্তে নামানো হয়েছিল গোয়েন্দাদের৷ গ্রামে পৌঁছে লোকজনের সঙ্গে কথা বলে, খাবার-পানি-বাতাস সব কিছু পরীক্ষা করে যে রিপোর্ট তারা দিয়েছেন তাতে মাথায় হাত পড়েছে প্রশাসনের৷ তদন্তকারীদের বক্তব্য, পানি-বাতাস-খাবার কিছুতেই কোনো সমস্যা নেই৷ বাতাসেও হয়নি কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়া৷ এই ঘটনা নেহাতই সহজে সরকারি চাকরি পাওয়ার প্রক্রিয়া৷

ব্যাপারটা কীরকম? বিভিন্ন সরকারি নথিপত্র ঘেঁটে হঠাৎই বিষয়টি আবিষ্কার করে মধ্যপ্রদেশের স্বাস্থ্য দফতর৷ তারা দেখতে পান, মধ্যপ্রদেশের মন্দল নামের একটি গ্রামে জনসংখ্যার একটি বড় অংশ কানে কম শোনে৷ আর এই সব কানে কম শোনা গ্রামবাসীরা কালা হয়েছেন ঠিক ২০ বছর পেরনোর পরই৷ এরপরই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পাঠানো হয় তদন্তকারীদের৷

তদন্তকারীরা জানান, বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে মন্দল গ্রামে চলছে এই কাণ্ডকারখানা৷ তরুণরা চাকরিযোগ্য হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কানে না শোনার ভান করে দ্বারস্থ হচ্ছেন স্বাস্থ্য দফতরের৷ তৈরি করাচ্ছেন কানে না শোনার নকল সার্টিফিকেট৷ আর তার সাহায্যেই গ্রামের পঞ্চায়েতে কিংবা রাজ্য সরকারের দফতরে প্রতিবন্ধী কোটায় পেয়ে যাচ্ছেন চাকরি৷ বিষয়টি বেআইনি তো বটেই, সেই সঙ্গে যারা সত্যিই প্রতিবন্ধী তাদেরও বঞ্চিত করা হচ্ছে সরকারি চাকরির সুযোগ পাওয়া থেকে৷ এ কথা জানার সঙ্গে সঙ্গেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন৷

এযাবত্‍ যারা এরকম নকল সার্টিফিকেটের সাহায্যে চাকরি জোগাড় করেছেন, তাদের চিহ্নিত করার পাশাপাশি, উপযুক্ত শাস্তি দেয়ার ব্যাপারেও পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানিয়েছে মধ্যপ্রদেশ সরকার৷ কিন্তু, যারা এই বেআইনি কাজ করেছেন সেই গ্রামের যুবকরা কী বলছেন?

গ্রামেরই এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, গত কয়েক বছরে গ্রামে বেকারত্বের সংখ্যা বেড়েছে৷ আবহাওয়াজনিত সমস্যা ও নানা প্রতিকূলতায় কৃষিকাজেও লাভের মুখ দেখছেন না চাষিরা৷ ফলে ভরসা সরকারি চাকরি৷ কিন্তু, সেখানেও প্রচুর প্রতিযোগিতা৷ নানা কোটায় চাকরি দিয়ে সাধারণদের জন্য পড়ে থাকে সামান্যই৷ বাধ্য হয়েই এই পথ নিয়েছে গ্রামের তরুণ প্রজন্ম৷ যদিও এসব যুক্তিতে মন গলছে না প্রশাসনের৷ দ্রুত তদন্ত ও শাস্তির নির্দেশ দিয়েছে তারা৷
১৫ আগস্ট, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই