আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মোজাম্বিকে গাড়ি থেকে নামিয়ে ছয়জনকে গুলি করে হত্যা করেছে দেশটির পুলিশ। এ সময় গাড়িতে থাকা অপর দুই বাংলাদেশী শ্রমিক পালিয়ে জীবন বাঁচিয়েছেন। তবে মোজাম্বিকের পুলিশের দাবি বিদ্রোহী দল মোজাম্বিক ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স (রেনামো) সদস্যদের হামলায় ছয় শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
গত শুক্রবার এই ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয় সময় সোমবার দেশটির বেসরকারি টিভি চ্যানেল 'এসটিভি'র বরাতে এ খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
হামলা থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া দুই বাংলাদেশী নাম প্রকাশ না করার শর্তে 'এসটিভি'র কাছে দাবি করেন, মোজাম্বিকের ক্ষমতাসীন দল ফ্রন্ট ফর লিবারেশন অব মোজাম্বিকের (ফ্রেলিমো) নেতৃত্বাধীন সরকারের বাহিনীই প্রথমে হামলা শুরু করেছে।
দুই বাংলাদেশীর একজন বলেন, নিহত ছয় মোজাম্বিকানসহ তারা কৃষি খামারের পণ্য বিক্রয় কর্মীর কাজ করতেন। গত শুক্রবার তারা একটি গাড়ি করে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে পুলিশ গাড়ি থামিয়ে তাদের পরিচয়পত্র যাচাই করে। এরপর গাড়িতে করেই তাদের একটি বনে নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, পুলিশ মোজাম্বিকানদের লাইনে দাঁড় করিয়ে একের পর এক গুলি করে হত্যা করে। তবে তিনি সেখান থেকে পালাতে সক্ষম হন।
এদিকে দ্বিতীয় বাংলাদেশী দাবি করেন, তাদেরকে একটি জঙ্গলে নিয়ে গাড়ি থেকে একজন একজন করে নামিয়ে গুলি করা হয়। তিনি প্রাণে বাঁচার জন্য গাড়ি থেকে লাফিয়ে পালিয়ে যান। এরপরও তাকে গুলি করা হয়। তবে জঙ্গলে পালিয়ে প্রাণে রক্ষা পান তিনি।
এদিকে মোজাম্বিক পুলিশের মুখপাত্র ড্যানিয়েল ম্যাকুয়াকুয়া এএফপির কাছে দাবি করেন, রেনামোর সশস্ত্র বিদ্রোহীরা গাড়িটিতে হামলা চালিয়েছে।
তিনি জানান, গাড়িটি আগুনে পুড়ে না যাওয়া পর্যন্ত তারা গুলি চালিয়েছিল। ফলে গাড়িতে থাকায় ছয়জন সাধারণ মানুষ পুড়ে মারা যায়।
পুলিশের এ মুখপাত্র আরও জানান, ওই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের খুঁজছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালে স্বাধীনতার পর থেকেই মোজাম্বিকে ক্ষমতায় আছে ফ্রেলিমো পার্টি। স্বাধীনতার পর থেকে দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে এ দলটির সঙ্গে গৃহযুদ্ধে লিপ্ত হয় বিদ্রোহী রেনামো।
প্রায় ১৫ বছরের অধিক সময় ধরে বহু রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে ১৯৯২ সালে উভয় দল একটি পারস্পরিক শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করে; যা রোম জেনারেল পিস একোর্ড নামে পরিচিত। এর মাধ্যমে মোজাম্বিকের ইতিহাসে প্রথম বহুদলীয় সংসদীয় নির্বাচনের সূচনা হয়।
অন্যদিকে চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত বিচারের মাধ্যমে ৮৩ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মোজাম্বিকা হিউম্যান রাইটস লিগ (এলডিএইচ)।
১৬ আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম