বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৬, ০৭:২৬:২৮

কলকাতায় আটক জঙ্গি মুসাকে জেরা করলো বাংলাদেশী গোয়েন্দারা

কলকাতায় আটক জঙ্গি মুসাকে জেরা করলো বাংলাদেশী গোয়েন্দারা

সুরবেক বিশ্বাস : আইএসের নামে যারা বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালাচ্ছে, সে দেশের সরকারের মতে, তারা জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ বা জেএমবি-রই একটি অংশ। এদের ‘নয়া জেএমবি’ বলছে বাংলাদেশের পুলিশ-প্রশাসন। পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান স্টেশনে ধরা পড়া সন্দেহভাজন আইএস জঙ্গি মোহাম্মদ মুসাউদ্দিন ওরফে মুসার থেকে এই নয়া জেএমবি সম্পর্কেই বিস্তারিত খোঁজ নিলো বাংলাদেশের তদন্তকারী দল।

আইএসে যোগ দেওয়া নিয়ে মুসার পথপ্রদর্শক যে, বাংলাদেশি সেই আবু সুলেমান ওরফে মোহাম্মদ সুলেমান যে নয়া জেএমবিই এক জন হোতা, বাংলাদেশের তদন্তকারী দল সে ব্যাপারে নিশ্চিত। পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের লাভপুরের বাসিন্দা মুসা ভারতের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থাকে (এনআইএ) আগেই সে ইঙ্গিত দিয়েছিল।

এনআইএ সূত্রের খবর, মুসা বলেছে, বয়সে তরুণ, তথ্যপ্রযুক্তিতে দড়, জেএমবি সদস্যদের একাংশ সিরিয়ায় থাকা আইএসের হোতাদের সঙ্গে পরামর্শ করে বাংলাদেশে জঙ্গি হামলা চালাচ্ছে। সুলেমান এদের অন্যতম মাথা বলে মুসার দাবি। গোয়েন্দারা জানান, খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরে পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতে জেএমবি-র নেটওয়ার্ক বেআব্রু হয় এবং একের পর এক হোতা ও সদস্য ধরা পড়ে। সেই জেএমবি মূলত ছিল আল কায়দার অনুসারী। কিন্তু খাগড়াগড়ের ঘটনার কিছু দিন পরেই জেএমবির ওই তরুণ সদস্যেরা সংগঠনের মধ্যে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে নেয় এবং আইএসের পথ ধরে।

এক এনআইএ কর্মকর্তা বলেন, ‘খাগড়াগড়-কাণ্ডের পর জেএমবি-র তরুণ এক দল সদস্য মনে করে, বিশাল প্রস্তুতির দরকার নেই, শত্রু হত্যার জন্য দ্রুত পরিকল্পনা করে ঝটিতি কাজ সারতে হবে।’ ওই কর্তার কথায়, ‘নয়া জেএমবি হোক কিংবা আইএসের শাখা, তাদের সদস্য সংখ্যা কম হলেও তৎপরতা বেশি।’

বাংলাদেশ সরকারের দাবি, গত জুলাই মাসে ঢাকার গুলশান ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় পরপর জঙ্গি হামলা এবং তার আগে বাংলাদেশে একের পর এক মুক্তমনাদের হত্যায় নয়া জেএমবিই জড়িত। বুধবারই বাংলাদেশের ৬৩টি জেলার ৩০০টি জায়গায় ৫০০ বিস্ফোরণের ১১ বছর পূর্ণ হল। ২০০৫ এর ১৭ আগস্ট হওয়া ওই ধারাবাহিক নাশকতা তাদের কাজ বলে জেএমবি জানিয়েছিল। তার পরেই তাদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।

মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সল্টলেকের এনআইএ অফিসে মুসার সঙ্গে কথা বলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তিন কর্তা। এনআইএ-র দুই শীর্ষকর্তাও সেখানে ছিলেন। ফের বুধবার ভোর ৫টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত মুসার সঙ্গে বাংলাদেশের তদন্তকারী দল কথা বলে। মঙ্গলবার মুসাকে হেফাজতে পেয়েছিল এনআইএ। গুলশান ও কিশোরগঞ্জে জঙ্গি হামলার তদন্তে আসা বাংলাদেশের তদন্তকারী দলটি কলকাতায় আসে তার আগের রাতেই। সূত্রের খবর, বাংলাদেশের তদন্তকারী কর্মকর্তারা মুসার সঙ্গে কথা বলার পরে কার্যত সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এ দিন সন্ধ্যায় তারা ঢাকার বিমান ধরতে কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছান। সূত্র : আনন্দবাজার
১৮ আগস্ট ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস‌‌‌‌

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে