শনিবার, ২০ আগস্ট, ২০১৬, ০৯:৩০:১৪

কাশ্মীরীদের বিরুদ্ধে ৩০ দিনে সাড়ে ১৩ লাখ ছররা ব্যবহার

কাশ্মীরীদের বিরুদ্ধে ৩০ দিনে সাড়ে ১৩ লাখ ছররা ব্যবহার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারত শাসিত কাশ্মীরে সাম্প্রতিক অস্থিরতা সামলাতে দেশটির আধা সামরিক বাহিনী এক মাসে প্রায় সাড়ে ১৩ লক্ষ ছররা ব্যবহার করেছে। একই সময়ের মধ্যে সাড়ে আট হাজার কাঁদানে গ্যাসের শেলও ফাটিয়েছে তারা।

আধা সামরিক বাহিনীর ছোঁড়া ছররা গুলি বা কাঁদানে গ্যাসে ৬৬ জন মারা গেছেন, বহু মানুষ আহত হয়েছেন, অনেকে অন্ধ হয়ে গেছেন।

আদালতে দায়ের করা এক মামলার জবাবে ভারতের কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনী নিজেরাই এই হিসাব দিয়ে বলেছে ছররা বন্দুক ব্যবহার না করে যদি তারা গুলি ব্যবহার করতেন, তাহলে মৃত্যু আরও বেশি হতে পারতো।

ভারত শাসিত কাশ্মীরে উগ্রপন্থী কমান্ডার বুরহান ওয়ানির নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে গুলিতে মৃত্যুর পর থেকেই সেখানে চলছে ব্যাপক বিক্ষোভ। ওই বিক্ষোভ সামাল দেওয়ার জন্য পুলিশ আর অাধা সামরিক বাহিনীগুলি ব্যাপকহারে ছররা গুলি ব্যবহার করেছিল।
আদালতে দায়ের করা একটি জনস্বার্থ মামলার জবাব দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনী জানিয়েছে তারা ১১ অাগস্ট বিক্ষোভ শুরুর ৩৪ তম দিন পর্যন্ত তিন হাজার ছররা গুলির কার্তুজ ছুঁড়েছে, অর্থাৎ প্রায় সাড়ে তেরো লক্ষ ছররা ছোঁড়া হয়েছে।

ওই একই সময়ে সাড়ে আট হাজার কাঁদানে গ্যাসও ছোঁড়া হয়েছে। কাশ্মীরের হাসপাতাল প্রশাসন বলছে এখন পর্যন্ত ছররায় আহত ৬০০ মানুষের অপারেশন করা হয়েছে যাদের মধ্যে ১১২ জনের চোখে ছররা লেগেছে। আহতদের অনেকের পরিবার বলছে অপারেশনের পরেও আহতরা চোখে দেখতে পাচ্ছেন না।

চিকিৎসকেরা বলছেন অনেক ক্ষেত্রেই ছররা গুলি বন্দুকের গুলির থেকেও মারাত্মক এবং প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে।

রাজা হরি সিং হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক ড. জাভেদ বলেন, গুলির আঘাত শুধু মাত্র একটি-ই হয়, কিন্তু ছররা মানুষের শরীরে একইসঙ্গে অনেকগুলি আঘাত বা ছিদ্র তৈরি করে দেয়। অপারেশনের সময়ে দেহে থেকে যাওয়া সবগুলি ছররার সন্ধান পাওয়াও কঠিন। এর ফলে আহতের মৃত্যুও হতে পারে।

তবে কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনীর এক মুখপাত্র রাজেশ যাদব বলছেন, পরিস্থিতি এমনিই হয়ে গেছে যে, কেউ পাথর ছুঁড়ছে, কেউ পেট্রল বোমা ছুঁড়ছে, আবার অনেক জায়গায় তো গ্রেনেডও ছোঁড়া হয়েছে বিক্ষোভকারীদের দিক থেকে। এই পরিস্থিতিতে প্রতিদিন যদি বাহিনীর সদস্যদের বলতে হয় সংযত হওয়ার কথা তাতে তো বাহিনীর মনোবলই ভেঙে যাবে। সব কিছুর তো একটা সীমা থাকে।

একসময়ে শিকার করার জন্য এ ধরণের ছররা গুলি ব্যবহার করা হত। ছোট ছোট ধাতব বলের ভেতরে বারুদ ভরে তারপরে প্লাস্টিকের আচ্ছাদন দিয়ে একেকটি ছররা তৈরি হয়। একেকটি কার্তুজে সাড়ে চারশো ছররা থাকে – যেটা বন্দুক থেকে ছোঁড়া হলে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভকারীদের আহত করে। সূত্র: বিবিসি।
২০ আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে