বৃহস্পতিবার, ০১ অক্টোবর, ২০১৫, ১১:৩৪:২৫

কাশ্মীর নিয়ে নওয়াজের ফর্মুলা

কাশ্মীর নিয়ে নওয়াজের ফর্মুলা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভূ-স্বর্গ কাশ্মীর নিয়ে পাক-ভারত সংঘাত কারো অজানা নয়, এবার জাতিসংঘের মঞ্চে দাঁড়িয়ে কাশ্মীর নিয়ে নিজস্ব ফর্মুলা দিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ।

তাঁর মতে, কাশ্মীরে ইস্যুতে ব্যর্থতা আসলে জাতিসংঘের ব্যর্থতা। কাশ্মীরে শান্তি ফেরাতে ‘চার পয়েন্টে’র ফর্মুলাও বাতলে দেন নওয়াজ। কাশ্মীর ও সিয়াচেন থেকে সেনা সরানো-সহ কোনও রকম পরিস্থিতিতেই ‘হুমকি’র আশ্রয় নেওয়া যে বাঞ্ছনীয় নয়, তা-ও জানান তিনি।

বুধবার জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ভাষণ দেন পাক প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই এ কথা বলেন তিনি। তাঁর ফর্মুলার অঙ্গ হিসাবেই নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ২০০৩ সালের সংঘর্ষবিরতি চুক্তির মান্যতার পক্ষেও জোরালো সওয়াল করেন নওয়াজ। যদিও ভারতের বরাবরের দাবি, নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর এলাকার বার বার ওই চুক্তি লক্সঘন করেছে পাকিস্তান।

জাতিসংঘের নওয়াজের শান্তি-ফর্মুলার আগে এ দিন কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ সরাসরি নিশানা করল ইসলামাবাদকেই।

প্রকাশ্যে এল এমন এক ভিডিও যা পাকিস্তানের মুখোশ খুলে দিয়ে দেখিয়ে দিল পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বাসিন্দারা পুলিশ ও পাক সেনার হাতে কতটা লাঞ্ছিত। নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে মুজফ্ফরাবাদ, গিলগিট ও কোটলির মতো এলাকায় এখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

অধিকৃত কাশ্মীর থেকে পাকিস্তানকে হঠাতে রাস্তায় নেমেছেন সেখানকার মানুষ। তাঁদের মুহুর্মুহু সেøাগানে অতিষ্ঠ পুলিশ ও পাক সেনার চরম দমনপীড়নের ছবিও ধরা পড়েছে ওই ভিডিওতে। দেখা যাচ্ছে, এই এলাকাগুলির পথে পথে বিশাল সংখ্যায় মানুষ জড়ো হয়েছেন। পাকিস্তানের হাত থেকে ‘স্বাধীন’ হতে চড়া সুরে স্লোগান দিচ্ছেন তাঁরা। এক কাশ্মীরি বলেন, ‘‘আজাদ কাশ্মীর কখনও পাকিস্তানের অংশ ছিল না, থাকবেও না।’’

জনতা সেøাগান দিচ্ছেন, ‘‘পাকিস্তানি ফৌজিও, হামারা কাশ্মীর ছোড় দো।’’ আর কেউ কেউ বলছেন, পাকিস্তানের থেকে অনেক ভাল ভারত। স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন মানুষ। মহিলারা ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন ঘুষের রাজত্বের বিরুদ্ধে।

আর এ সবে পাক বাহিনীর প্রতিক্রিয়া কী?

মাথার ঠিক রাখতে না পেরে বন্দুকের গুঁতো দিয়ে বিক্ষোভকারীদের ফেলে পেটাচ্ছে পাকিস্তানের সেনা। তাঁদের গলায় ফাঁস লাগিয়েও টেনে নিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে সেনাদের। মারমুখী সেনার হাত থেকে বাঁচতে প্রাণভয়ে পালাচ্ছেন সাধারণ কাশ্মীরি মানুষ। জটলার মধ্য থেকে তখনও ঘনঘন উঠে আসছে ‘পাকিস্তান মুর্দাবাদ’ ধ্বনি। আর উঠছে পাকিস্তান থেকে ‘আজাদি’ চেয়ে গরম শ্লোগান।

এত দিন সম্পূর্ণ অদেখা পাক অধিকৃত কাশ্মীরের এই নরক যন্ত্রণার ছবি একেবারে ঝামা ঘষে দিয়েছে ইসলামাবাদের মুখে। কেননা, জম্মু-কাশ্মীরে ভারতীয় বাহিনীর হাতে কতটা ব্যাপক ভাবে লাঞ্ছিত হচ্ছেন কাশ্মীরিরা, জাতিসংঘ থেকে শুরু করে সর্বত্র সেটাই প্রচার করার জন্য মুখিয়ে থাকে তারা।

শ্রীনগরে কাশ্মীরিদের একমাত্র মুখ হিসেবে হুরিয়তদের তুলে ধরে কিছু দিন আগেই নয়াদিল্লির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক থেকে সরে এসেছে পাকিস্তান। এ বার নিউ ইয়র্কেও জাতিসংঘের সাধারণ সভায় কাশ্মীর নিয়ে সরব হয়েছে পাক।

এই বিতর্কের আবহেই একটি চ্যানেলে ফুটে উঠল এমন ছবি যা ইসলামাবাদের কূটনীতিকে ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। স্বাভাবিক ভাবেই মুখ বাঁচাতে ব্যস্ত পাকিস্তান দাবি করেছে, বাস্তবে এমন কিছুর অস্তিত্ব নেই। মানবাধিকার লক্সঘনের অভিযোগ করে এই ভিডিও একটা সাজানো ব্যাপার।

আর ভারত? গোটা বিষয়টি নয়াদিল্লির কাছে যেন মেঘ না চাইতেই জল। এখন এ নিয়ে ইসলামাবাদকে কড়া জবাব দেওয়ার অপেক্ষায় ভারত। সূত্র: আনন্দবাজার
০১ অক্টোবর ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে