মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৬, ১১:১৫:০৩

ফারাক্কা বাঁধটাই তুলে দেয়ার দাবি নীতিশ কুমারের

ফারাক্কা বাঁধটাই তুলে দেয়ার দাবি নীতিশ কুমারের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতে বিহার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করে বিতর্কিত ফারাক্কা বাঁধকে পুরোপুরি সরিয়ে দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন।

রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার সময় তিনি বলেন, ফারাক্কা বাঁধের জেরে গঙ্গাতে যে বিপুল পরিমাণ সিল্ট বা পলি পড়ছে তার জন্য প্রতি বছর বিহারকে বন্যায় ভুগতে হচ্ছে – এবং এর একটা স্থায়ী সমাধান হলো ফারাক্কাটাই তুলে দেয়া।

ফারাক্কা নিয়ে ভারতের প্রতিবেশী বাংলাদেশের নানা আপত্তি আছে বহুদিন ধরেই, কিন্তু ভারতের একজন অত্যন্ত প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ও মুখ্যমন্ত্রীও এই প্রথম ফারাক্কা বাঁধ প্রত্যাহারের দাবি তুললেন।

একচল্লিশ বছর আগে গঙ্গার উপর যখন ফারাক্কা বাঁধ চালু করা হয়, তার একটা প্রধান উদ্দেশ্য ছিল জলপ্রবাহের একটা অংশকে হুগলী নদীতে চালিত করে কলকাতা বন্দরকে পুনরুজ্জীবিত করা।

সে উদ্দেশ্য পুরোপুরি সফল না-হলেও ফারাক্কার জেরে গঙ্গার উজানে যে পলি পড়া শুরু হয়েছে, তারে জেরে প্রতি বছরই বর্ষার মরশুমে বন্যাকবলিত হয়ে পড়ছে বিহার ও উত্তরপ্রদেশের একটা বিস্তীর্ণ অংশ।

ফারাক্কার থেকে কোনো লাভ উজানের এই সব রাজ্য পাচ্ছে না, কিন্তু প্রায় নিয়ম করে ফি বছরই তাদের ভুগতে হচ্ছে ফারাক্কার জন্য।

এই পটভূমিতেই আজ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে ফারাক্কা বাঁধ তুলে দেয়ার প্রস্তাব দেন বিহারের তৃতীয় মেয়াদের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের ঠিক আগেই তিনি বলেন, 'বিহারে বন্যার এই হাল গঙ্গায় সিল্ট বা পলি জমার কারণেই। যবে থেকে ফারাক্কা বাঁধ নির্মিত হয়েছে, তখন থেকেই এই পলি জমার শুরু।'

'আগে যে সব পলি নদীর প্রবাহে ভেসে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়ত, এখন ফারাক্কার কারণে সেটাই নদীর বুকে জমা হয়ে বন্যা ডেকে আনছে। আমি তাই গত দশ বছর ধরে বলে আসছি এই সিল্ট ম্যানেজমেন্ট না-করলে বিহার কিছুতেই বন্যা থেকে পরিত্রাণ পাবে না।'

'আমরা কোনো পয়সা চাই না – কিন্তু চাই কেন্দ্রীয় সরকার বা তাদের সংস্থাগুলো এসে দেখুক কীভাবে এই সিল্ট সরানো যায়। এর একটা রাস্তা হতে পারে ফারাক্কা বাঁধটাই হঠিয়ে দেয়া – আর আপনাদের কাছে বিকল্প কোনো প্রস্তাব থাকলে সেটাও অনুসরণ করে দেখা যেতে পারে।'

নীতিশ কুমারের এই কথা থেকেই স্পষ্ট বিহারে প্রতি বছরের বন্যার জন্য তার সরকার প্রধানত ফারাক্কা ব্যারাজকেই দায়ী করছেন।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বিহার সরকারের পক্ষ থেকে একটি চার্টও তুলে দেয়া হয়েছে – যাতে ফারাক্কা তৈরি হওয়ার আগে ও পরে বিহারে গঙ্গানদীর গভীরতা বা নাব্যতা কতটা কমেছে সেই পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়।

বিহার সরকারের এই দাবি মেনে ফারাক্কা বাঁধ প্রত্যাহার করে নেয়া – সোজা কথায় বাঁধের সব স্লুইস গেটগুলো পুরোপুরি সরিয়ে দেয়া - সহজ নয় ঠিকই, কিন্তু ফারাক্কার বিরুদ্ধে ভারতের একজন অত্যন্ত প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ যেভাবে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন সেটাকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।-বিবিসি
২৩ আগস্ট, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে