শনিবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৬, ০৯:১৩:৩৮

আবারও যুদ্ধের দামামা বেজে উঠল পূর্ব ইউরোপে!

আবারও যুদ্ধের দামামা বেজে উঠল পূর্ব ইউরোপে!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সিরিয়াসহ একাধিক সংকটে জর্জরিত গোটা বিশ্ব! তখন নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিচ্ছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। ক্রাইমিয়া উপদ্বীপে ঘটনাপ্রবাহের জের ধরে পুরোপুরি যুদ্ধের আশঙ্কাও করছে কিছু মহল।

অগস্ট মাসটা রাশিয়ার জন্য মোটেই ভালো যায় না। গত ২৫ বছরে এই মাসেই একের পর এক সংকটের মুখ দেখেছে দেশাটি। ১৯৯১ সালে মিখাইল গর্বাচভের বিরুদ্ধে সামরিক অভ্যুত্থান, ১৯৯৮ সালে মুদ্রা হিসেবে রুবেল-এর আচমকা দরপতন, ২০০০ সালে ‘কুরস্ক’ ডুবোজাহাজ বিপর্যয়, ২০০৮ সালে জর্জিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ – এ সব ঘটেছে এই ‘অভিশপ্ত’ অগস্ট মাসেই।

এবার রাশিয়া অধিকৃত ক্রাইমিয়া উপদ্বীপে আবার নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে, যার পরিণাম হিসেবে পুরোপুরি যুদ্ধ বেঁধে যাবার আশঙ্কা রয়েছে।

ক্রাইমিয়া উপদ্বীপকে কেন্দ্র করে পারস্পরিক দোষারোপের মাধ্যমে বাড়ছে উত্তেজনা। প্রথমে রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে এক অভিযোগ এনেছিল।

মস্কোর দাবি, ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড থেকে সশস্ত্র যোদ্ধারা বিস্ফোরক নিয়ে ক্রাইমিয়ায় প্রবেশ করে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে৷ তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কিয়েভ সরকারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ এনেছেন। এমন ‘বিপজ্জনক খেলা’ সম্পর্কে সাবধান করে দিয়েছেন তিনি। পুতিন কৃষ্ণ সাগরে রুশ নৌ-বাহিনীর ‘ওয়ার গেমস’ বা সামরিক মহড়ার ঘোষণাও করেছেন।

ইউক্রেন অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে রাশিয়ার কাছে প্রমাণ চেয়েছে। জাতিসংঘে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে সরাসরি রাশিয়ার কাছে স্পষ্ট তথ্য-প্রমাণ দেখতে চেয়েছেন। তিনি বলেন, গোটা অঞ্চলে রাশিয়া ৪০,০০০ সৈন্য মোতায়েন করেছে, যার উদ্দেশ্য মোটেই ভালো হতে পারে না। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পেত্রো পোরোশেংকো ক্রাইমিয়া ও দেশের পূর্বাঞ্চলের সীমানায় সৈন্যদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। ইউক্রেনের সরকারের ধারণা, রাশিয়া উত্তেজনা বাড়াতে ইচ্ছা করেই এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দুই পক্ষের উদ্দেশ্যে উত্তেজনা কমাতে সংযমের ডাক দিয়েছে। মার্কিন বিদেশ মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, এমন কোনও পদক্ষেপ নেওয়া উচিত হবে না, যার ফলে পরিস্থিতি আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের মার্চ মাসে রাশিয়া ক্রাইমিয়া দখল করার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চলে আসছে। এই ঘটনার জের ধরে রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমী বিশ্বের সম্পর্কেরও চরম অবনতি ঘটেছে৷ চিনে আসন্ন জি-টোয়েন্টি বৈঠকে জার্মানি ও ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় রাশিয়া ও ইউক্রেনের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে যে বৈঠকের পরিকল্পনা করা হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে পুতিন সেই উদ্যোগকে ‘অর্থহীন’ বলে অভিহিত করেছেন।

রাশিয়ার নিরপেক্ষ সংবাদপত্র ‘ভেডোমস্টি’-র সম্পাদকীয়তে বর্তমান উত্তেজনার পিছনে পুতিনের বিশেষ মতলব আছে বলে দাবি করা হয়েছে৷ তাতে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশ-প্রধান ডনবাস এলাকায় শান্তি আনতে মিনস্ক শান্তি প্রক্রিয়া পুরোপুরি বানচাল করে তিনি রাশিয়ার জন্য আরও সুবিধাজনক অবস্থা সৃষ্টি করতে চান। -কলকাতা২৪
২৭ আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে