আন্তর্জাতিক ডেস্ক : হাসপাতাল থেকে সাহায্য না মেলায় স্ত্রীর লাশ কাঁধে নিয়ে প্রায় ১২ কিলোমিটার পথ হেঁটেছিলেন ভারতের ঊড়িষ্যার দানা মাঝি। এবারও অভিযোগ সেই হাসপাতালের বিরুদ্ধেই। উত্তরপ্রদেশের সরকারি হাসপাতাল লাল লাজপথ রাই হাসপাতাল চিকিৎসার ভার না নেওয়ায় বাবার কাঁধেই মৃত্যু হল ছোট্ট শিশু আনশ্ কুমার (১২)-এর।
সোমবার হাসপাতালের জরুরি বিভাগ কানপুরের বাসিন্দা সুনীল কুমারের শিশু সন্তানকে ভর্তি নিতে অস্বীকার করে। উল্টে বেশ কিছুটা সময় পরে সন্তানকে অন্য কোন শিশু হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার কথা বলা হয়। কিন্তু গরীব বাবার পক্ষে সন্তানকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার মতো আর্থিক অবস্থা না থাকায় এক প্রকার বাধ্য হয়েই নিজের কাঁধে সন্তানকে চাপিয়ে অন্য হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য হাঁটা শুরু করেন।
এরপর লালা লাজপথ রাই হাসপাতাল থেকে ২৫০ মিটার দূরে শিশু হাসপাতালে যখন পা রেখেছেন সুনীল, ততক্ষণে বাবার কাঁধেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ছোট্ট আনশ্।
জানা গেছে, গত রবিবার রাতে হঠাৎ করেই জ্বরে আক্রান্ত হয় আনশ্। ওই রাতেই ফজলগঞ্জে স্থানীয় চিকিৎসককে দেখান সুনীল কুমার। কিন্তু তাতেও জ্বর না কমায় সোমবার সকালেই লালা লাজপথ রাই হাসপাতালে সন্তানকে নিয়ে আসেন সুনীল।
সুনীল জানিয়েছেন, ‘আমি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকদের কাছে আমার সন্তানকে পরীক্ষা এবং তাকে ভর্তি করানোর জন্য অনুরোধ জানাই। এর প্রায় আধা ঘণ্টা পর হাসপাতাল থেকে আমাকে বলা হয় সন্তানকে শিশু হাসপাতালে স্থানান্তরিত করতে হবে। সন্তানকে সরাতে একটি স্ট্রেচারের জন্যও অনুরোধ জানাই, কিন্তু তারা তা দিতে অস্বীকার করে। এরপরই কাঁধে নিয়েই আমি শিশু হাসপাতালের দিকে রওয়ানা হই, কিন্তু সেই হাসপাতালে পৌঁছনো মাত্রই তাকে মৃত বলে ঘোষণা দেন চিকিৎসকরা’।
এরপর সন্তানের লাশ কাপড়ে বেঁধে নিজের কাঁধে নিয়েই বাড়ির উদ্যেশ্যে রওয়ানা দেন সুনীল। সেখানেও হাসপাতালের পক্ষ থেকে কোন অ্যাম্বুলেন্স বা অন্য কোন গাড়ি সরবরাহ করা হয়নি বলে অভিযোগ।
লালা লাজপথ রাই মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালের প্রিন্সিপাল নবনীত কুমার অবশ্য এই বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি। আর গত এক সপ্তাহের মধ্যে এরকম কয়েকটি ঘটনায় ভারতের স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। -বিডিপ্রতিদিন
৩০ আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম