বুধবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৬, ০৭:৩৩:৩৫

মোদির উপহার ফিরিয়ে দিলেন শ্রমিকরা

মোদির উপহার ফিরিয়ে দিলেন শ্রমিকরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ন্যূনতম বেতন বৃদ্ধি থেকে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের বকেয়া বোনাস মেটানো— ধর্মঘট এড়াতে শেষ বেলায় শ্রমিকদের জন্য নরেন্দ্র মোদি সরকার একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলো।

ভারতের কেন্দ্র সরকারের বক্তব্য, যে সব দাবিতে ২ সেপ্টেম্বর ধর্মঘট ডাকা হয়েছে, তার সিংহভাগই মেনে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু মন ভেজেনি শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের। তারা ধর্মঘটে অনড় থাকছেন বলে জানিয়েছেন।

বিএমএস বাদে সব কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনের ডাকা ধর্মঘটে ব্যাঙ্ক ও অধিকাংশ শিল্পক্ষেত্র অচল থাকবে বুঝতে পেরে গতকালই জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়, ধর্মঘট এড়াতে ভারত সরকারের তরফে কিছু পদক্ষেপ করা হবে।

তার পরেই মঙ্গলবার বিকেলে ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ঘোষণা করেন, সরকারের দু’বছরের বকেয়া বোনাস মিটিয়ে দেওয়া হবে। শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতনও বাড়ানো হচ্ছে। সি-শ্রেণিভুক্ত এলাকায় কৃষিক্ষেত্রের বাইরে অদক্ষ শ্রমিকদের দৈনিক বেতন ২৪৬ টাকা বাড়িয়ে ৩৫০ টাকা করা হচ্ছে। এর ফলে সাফাই কর্মী, পাহারাদার, খালাসি, কয়লা ছাড়া অন্যান্য খনির শ্রমিক, নির্মাণ কর্মীদের লাভ হবে। ঠিকা শ্রমিকদের নথিভুক্তিকরণ বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। অঙ্গনওয়াড়ি, আশা কর্মীদের সামাজিক সুরক্ষার বন্দোবস্ত হবে।

এক ডজন দাবি নিয়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল ভারতের শ্রমিক সংগঠনগুলি। যার মধ্যে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাঙ্কের সংযুক্তিকরণ থেকে প্রতিরক্ষা, রেলে বিদেশি লগ্নির বিরোধিতাও রয়েছে।

অরুন জেটলি বলেন, ‘শ্রমিকদের সমস্যা সংক্রান্ত সিংহভাগ দাবিই মেনে নিল সরকার। তবে বিদেশি লগ্নি নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত বদল হবে না।’ জেটলির যুক্তি, ব্যাঙ্ক কর্মীদের ধর্মঘটে যোগ দেওয়ার কোনও কারণ নেই। গত বছরেই তাদের বেতন সংশোধন হয়েছে। এর জন্য ইউনিয়নগুলি তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে গিয়েছেন। ভারতের অর্থমন্ত্রীর মতে, ব্যাঙ্কের সংযুক্তিকরণে কর্মীদের সমস্যা হবে না।

ভারতের কেন্দ্র সরকারের আশ্বাস উড়িয়ে দিয়েছেন শ্রমিক নেতারা। তাদের বক্তব্য, মোদি সরকার শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে কথা বলতে মন্ত্রীদের কমিটি তৈরি করেছিল। কিন্তু কমিটির শেষ বৈঠক হয়েছিল গত বছরের আগস্টে। তবে কয়েক মাসে মন্ত্রীদের কমিটি শুধু বিএমএস-এর সঙ্গে আলোচনা করেছে। অথচ সঙ্ঘ-পরিবারের শ্রমিক সংগঠন ধর্মঘটে যোগই দেয়নি।

এ নিয়ে ভারতের শ্রমমন্ত্রীর জবাব, তিনি ব্যক্তিগত ভাবে সকলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আর জেটলির যুক্তি, সরকার কী ভাবে বৈঠক করবে, তা সরকারের উপরেই ছেড়ে দেওয়া হোক।

গুরুদাস বলেন, ‘আমাদের ধর্মঘট কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। রাজ্যের বিরুদ্ধে নয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকারেরও উচিত, ধর্মঘটের বিরোধিতা থেকে সরে আসা।’

তবে কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক প্রতিক্রিয়া না জানালেও ধর্মঘট নিয়ে বামেদের নিশানা করেছেন। তার মন্তব্য, ‘বামেরা নিজেদের জমানায় শ্রমিকদের নূন্যতম বেতন বাড়ায়নি। এখন ধর্মঘট করে দরদ দেখাচ্ছে।’ - এবিপি

৩১ আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে