বৃহস্পতিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০৩:৩১:৫২

অপরাধবোধ থেকে মুক্তি পেতে আদালতে ইঞ্জিনিয়ার

অপরাধবোধ থেকে মুক্তি পেতে আদালতে ইঞ্জিনিয়ার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: অনুশোচনা অতি বিষম বস্তু। দস্যু রত্নাকরকে পর্যন্ত বাল্মীকিতে রূপান্তরিত করেছিল এই অপরাধবোধ৷ কিন্তু কলি যুগে আর সেই সুযোগ কোথায়? পাইলেও পাইতে পারেন অমূল্য রতন, তবে অপরাধের শাস্তির পাওয়ার জন্য গত তিন বছর ধরেও আবেদন-নিবেদন করেও লাভ হচ্ছে না বৈভব পাটিলের।

কিন্তু কী এমন অপরাধ করেছিলেন বৈভব? ২৬ বছরের এই যুবক পড়তেন ভারতের মুম্বইয়ের এক বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০১১ সালে সেখান নিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি নিয়ে পাশ করেন তিনি৷ কিন্তু, পাশ করেও মনে শান্তি ছিল না তাঁর৷ কারণ অতীতে করা একটিমাত্র অপরাধ। কী সেই অপরাধ?

ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রথম বছরেই অঙ্কের দ্বিতীয় পত্রে ফেল করে বসেন ২৬ বছরের বৈভব৷ মাথায় বাজ পড়ার মতো অবস্থা হয় তাঁর৷ কী করবেন, কিছুই ভেবে পাচ্ছিলেন না৷ এমন সময় বন্ধুর মাধ্যমে এক দালালের সঙ্গে পরিচয় হয় বৈভবের৷ ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে যে সেই বছর পাশ করিয়ে দেয় তাঁকে।

এই ঘটনার পর বহু সময় কেটে গেলেও অপরাধবোধ থেকে নিষ্কৃতি পাননি বৈভব৷ এই জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেও কোনও চাকরি গ্রহণ করেননি তিনি। মানসিক অবসাদ গ্রাস করেছিল তাঁকে। এর থেকে মুক্তি পেতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বারস্থ হন বৈভব৷ অনুরোধ জানান তাঁর ডিগ্রি বাতিল করে দিতে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় তা করতে নারাজ৷ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের যুক্তি, কীভাবে এই প্রতারণা বৈভব করেছেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাচ্ছেন না তিনি। এমনকী সেই দালালের নামও বলতে তিনি রাজি নন৷ এছাড়া মহারাষ্ট্র বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী কোনও ছাত্রের অভিযোগের ভিত্তিতে ডিগ্রি বাতিল করা যায় না।

বৈভবের পাল্টা যুক্তি, দালালের নাম বলে দিলে অনেক পড়ুয়াই বিপদে পড়তে পারেন৷ সেই কারণেই তিনি নাম বলতে চাইছেন না। তাঁর অভিযোগ নিজের আর্জি নিয়ে গত তিন বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বত্র দরবার করেছেন তিনি৷ কিন্তু লাভ তো হয়নি, উল্টে অনেকেই তাঁকে মনোবিদের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

শেষে বম্বে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন মুম্বইয়ের যুবক৷ কিন্তু তাঁর অভিযোগ, সেখানেও হারের ভয়ে তাঁর মামলা লড়তে কেউ রাজি ছিলেন না। এক আইনজীবী তাঁর পিটিশনটুকু দাখিল করতে রাজি ছিলেন বটে, তবে তাঁর একটাই শর্ত ছিল, পরিচয় গোপন রেখে এই কাজ করে দেবেন তিনি৷ তাঁর কল্যাণেই ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে পিটিশন দাখিল হয় বৈভবের অভিযোগের ভিত্তিতে৷ সেই বছরই সেপ্টেম্বর মাসে গৃহিত হয় মামলা৷ আপাতত নিজের মামলা নিজেই লড়ে যাচ্ছেন বৈভব। দাবি, অপরাধের শাস্তি চাই! -সংবাদ প্রতিদিন
০৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে