আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাজ্যে স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি ) মাধ্যমে শিক্ষাকর্মী নিয়োগের আবেদন রেকর্ড সংখ্যক প্রার্থী৷ সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত ও পোষিত উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে গ্রুপ ডি ও ক্লার্কের ৪, ৯২৩টি শূন্য পদে ২৭ লাখ আবেদন জমা পড়েছে, যা সর্বকালীন রেকর্ড৷
শুধু তাই নয়, আবেদনকারীদের মধ্যে স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি প্রার্থীর ছড়াছড়ি৷ যদিও কমিশন নির্ধারিত যোগ্যতা ছিল ক্লার্কের জন্য মাধ্যমিক ও গ্রুপ ডি পদে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ৷
টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানা গেছে।
এসএসসির সচিব নরেন্দ্রনাথ দত্ত বলেন, দু'টি স্তর মিলিয়ে ২৭ লাখ প্রার্থী আবেদন করেছে৷ তাদের মধ্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর থাকতেই পারে৷ তবে অত বেশি যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীর চাহিদা ছিল না৷
তিনি বলেন, আবেদনের শেষদিন ছিল চলতি বছরের ৩১ অগস্ট৷ 'গ্রুপ ডি পদে ১৫ লাখ ও ক্লার্কের জন্য ১২ লাখ চাকরি প্রার্থী আবেদন করেছে৷ যদিও ২০১০ সালে শেষবার যখন নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছিল তখন সাড়ে ৯ হাজারের বেশি শূন্যপদে ১১ লাখেরও বেশি আবেদন করেছিল৷
কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান রণজিত বসু বলেন, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি প্রার্থীরা আবেদন করলেও বিজ্ঞপ্তি মেনে ন্যূনতম যোগ্যতাই বরাবর বিবেচনা করা হয়৷ ক্লার্ক ও গ্রুপ ডি পদপিছু ৫৪৮ জন করে আবেদনকারী কেন? এ নিয়ে শিক্ষামহলে নানা ব্যাখ্য উঠে এসেছে৷
প্রথমত, রাজ্যের ১২ হাজারের বেশি স্কুলে শেষবার শিক্ষাকর্মী নিয়োগ হয়েছিল চার বছর আগে৷ যদিও তার বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছিল ২০১০ সালে৷ বাম আমলে দু'টি নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে বাছাইপর্ব শেষে ইন্টারভিউও হয়ে গিয়েছিল৷
রেজাল্ট তৈরি থাকলেও তারা অবশ্য নিয়োগপত্র দিয়ে যেতে পারেনি৷ পালাবদলের পর ৯ হাজারেরও বেশি আসনে নিয়োগ হয়েছিল৷ পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকে ৬ বছরে মাত্র একবার নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়েছে৷
গত বছর দু'টি স্তরেই দ্বিতীয়বার নিয়োগের টেট হলেও বিধানসভা ভোট ও আদালতের মামলার জেরে সদ্য তার ফল প্রকাশ হয়েছে৷ ফলে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ বহু চাকরি প্রার্থী ক্লার্কের জন্য আবেদন করেই থাকতে পারে৷
দ্বিতীয়ত, দু'টি নিয়োগ পরীক্ষাতেই একইসঙ্গে বসার আবেদন করতে পারবেন প্রার্থীরা৷ দু'টি পদে নিয়োগের জন্য একই জেলায় অথবা ভিন্ন অঞ্চলের একাধিক জেলায় পরীক্ষায় বসার আবেদন করা যাবে৷
কারণ পরীক্ষা দু'টি ভিন্ন দিনে হবে৷ সেইসঙ্গে রাজ্যের সরকারি সাহায্যপ্রান্ত ও পোষিত স্কুলে শিক্ষাকর্মী নিয়োগের পদ্ধতি আমূল বদলে গেছে। প্রিলিমিনারি পরীক্ষা পদ্ধতি উঠে যাচ্ছে৷ ক্লার্ক ও গ্রুপ -ডি নিয়োগে ৩০ নম্বরের এ পরীক্ষা এবার হবে না৷ পরিবর্তে ক্লার্ক পদে যোগ্যতামান করা হয়েছে ১০০ নম্বরে ও গ্রুপ ডি পদে ৫০ নম্বরের৷
তবে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা তুলে দেয়া নিয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি ) কর্তারা দ্বন্দ্বে৷ এতে হিতে বিপরীত না হয়৷
স্কুলশিক্ষা কর্তাদের একাংশের প্রস্তাব ছিল, দু'দফায় লিখিত পরীক্ষা নেয়ায় ফল প্রকাশে অনেকটা সময় গড়িয়ে যায়৷ তাই দু'টি স্তরেই সরাসরি মাল্টিপল চয়েস কোয়েশ্চন (এমসিকিউ) পদ্ধতিতে পরীক্ষা হোক৷
রাজ্য সরকার সেই দাবি মেনে নিয়েছে৷ কিন্ত্ত আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, সফল প্রার্থী মূল্যায়নে কমিশনকে বাড়তি চাপে পড়তে হতে পারে৷
২০ সেপ্টেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম