বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০৩:৫৮:১৬

গর্ভে মৃত সন্তান নিয়ে ৫ দিন, মারা গেলেন মা

গর্ভে মৃত সন্তান নিয়ে ৫ দিন, মারা গেলেন মা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: অর্থের কাছে দুনিয়াটা বড় অসহায়! অর্থের অভাবে অস্ত্রোপচার করাতে না পারায় পাঁচ দিন গর্ভে মৃত সন্তান বয়ে বেড়ানো এক মা শেষ পর্যন্ত মারা গেলেন।

ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যের কোরবা জেলায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে সম্প্রতি। হাসপাতালের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও অর্থের অভাবে চিকিৎসা না পেয়ে ঝরে গেল ২২ বছর বয়সি এক নারীর জীবন।

টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের এক খবরে বুধবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।

অসুস্থ স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে তিনটি হাসপাতালে চিকিৎসার আশায় ঘুরেছেন তার স্বামী। তিন জায়গা থেকেই প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন তারা। তাদের বলা হয়েছে, আগে ফি ও তিন ব্যাগ রক্ত জমা দিলেই কেবল অস্ত্রোপচার করে গর্ভের মৃত সন্তান অপসারণ করা হবে। কিন্তু চাহিদামতো ফি জমা দিতে না পারায় কোনো চিকিৎসা পাননি তারা।

বিষয়টি জানাজানি হলে ছত্তিশগড়ের নারী কমিশন তদন্ত শুরু করে। এতে উঠে এসেছে নির্মম এ সত্য। ফি দিতে ব্যর্থ হওয়ায় মৃত্যুযন্ত্রণায় কাতর নারীর অস্ত্রোপচার করেনি কোনো হাসপাতাল।

কোরবা জেলার কোদিবাহার এলাকার বাসিন্দা গুলাবদাস মহন্ত ও তার স্ত্রী সরস্বতী (২২)। অন্তঃসত্ত্বা সরস্বতী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে স্ক্যানে ধরা পড়ে গর্ভের আট মাসের সন্তান মারা গেছে। দ্রুত অপসারণ করতে হবে।

যমুনাদেবী মেমোরিয়াল মেটারনিটি হাসপাতালের চিকিৎসকরা মহন্ত-সরস্বতী দম্পতিকে সোমবার জানান, গর্ভের মৃত সন্তান দ্রুত অপসারণ করতে হবে। এ জন্য আগে হাসপাতালে ১০ হাজার রুপি ফি এবং তিন ব্যাগ রক্ত জমা দিতে হবে।

যন্ত্রণা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠতে থাকে। এদিকে তারা অর্থের জোগাড় করতে পারেননি। মরমর অবস্থায় সরস্বতীকে আবারও একই হাসপাতালে নিয়ে যান মহন্ত। কিন্তু ফি জমা না দিলে তারা অস্ত্রোপচার করবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়।

চিকিৎসকরা সরস্বতীকে অন্য হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এর মধ্যে ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়েছে। অবস্থার আরো অবনতি হয়েছে। সোমবারই তারা পাশের কৃষ্ণ হাসপাতালে যান। কিন্তু সেখানেও একই পরিস্থিতি। ফি ছাড়া ভর্তি করা হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয় তাদের।

সরস্বতীর অবস্থা আরো খারাপ হতে থাকে। সোমবার সন্ধ্যার দিকে তাকে সৃষ্টি হাসপাতালে নেওয়া হয়। মুমূর্ষু সরস্বতীকে দেখার পরও চিকিৎসকরা জানান, মঙ্গলবার তার অস্ত্রোপচার করা হবে। কিন্তু সে পর্যন্ত আর অপেক্ষা করেননি তিনি। অভাবের কাছ হার মেনে বিদায় নিয়েছেন। মৃত্যু তাকে যন্ত্রণামুক্ত করেছে।
২১ সেপ্টেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে