আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সন্দেহ দানা বেঁধেছে অন্য জায়গায়। সেনাঘাঁটি তো নিরাপদ জায়গা। সেখানে রয়েছে সবসময়ের টহলদারি। মাছি গলার উপায় থাকে না। ভোররাতে শিফট শেষ করে জম্মু-কাশ্মীরের উরি সেক্টরের সেনাঘাঁটিতে একদল সেনা ঘুমোতে গিয়েছিল। অন্যদল সেই সময়ে অতন্দ্র পাহারা দিচ্ছিল।
ঘড়ির কাঁটা বলছে তখন ভোর পাঁচটা। আচমকাই সেনাঘাঁটিতে বিস্ফোরণ ঘটে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই একাধিক সেনাতাঁবুতে জ্বলে ওঠে আগুন। অধিকাংশ সেনাই তখন ঘুমে অচৈতন্য। আগুনের লেলিহান শিখা মুহূর্তে ১৭ জন জওয়ানকে মৃত্যুর কোলে ঠেলে দেয়। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় আরও ৩ জওয়ানের।
সেনারা প্রথমটায় বুঝেই উঠতে পারেননি। শুরু হয়ে যায় গুলিবর্ষণ। উরি-হামলার পর কেটে গিয়েছে ৭২ ঘণ্টারও বেশি সময়। এই হামলার পিছনে কাদের হাত রয়েছে? তা খতিয়ে দেখার জন্য ইতিমধ্যেই নেমে পড়েছে জাতীয় গোয়েন্দারা। সেনাবাহিনীর ভিতর থেকেই কেউ জঙ্গিদের হাতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে দিয়ে হামলায় মদত দিয়েছে কি না, গোয়েন্দারা তা-ও খতিয়ে দেখছেন।
পুরো বিষয়টা খতিয়ে দেখার কাজে নেমে পড়েছেন তাঁরা। এক এনআইএ (ন্যাশনাল ইনটেলিজেন্স এজেন্সি) আধিকারিক এবেলা এর সঙ্গে কথা বলার সময়ে তুলে ধরেছেন বেশ কিছু চমকপ্রদ তথ্য। এবং এই তথ্যের নিরিখে উরি-হামলার আরও গভীরে যাওয়া সম্ভব বলেই মনে করা হচ্ছে। মঙ্গলবারই এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
সুখদর গ্রামের ভিতর দিয়েই জঙ্গিরা সেনাঘাঁটিতে অনুপ্রবেশ করেছে বলে অনুমান করছেন গোয়েন্দারা। তদন্তে নেমে গোয়েন্দাদের হাতে ইতিমধ্যেই এসে পৌঁছেছে একটি জিপিএস ডিভাইস (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম)। ঘটনা হল, দু’টি জিপিএস-এর মধ্যে একটি জিপিএস আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হামলার ঠিক আগে জঙ্গিদের মধ্যে কী কথাবার্তা হয়েছিল, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এবং এই কথাবার্তার নিরিখেই গোয়েন্দারা মনে করছেন, জৈশ-ই-মহম্মদই রয়েছে এই হামলার পিছনে।
সন্দেহ দানা বেঁধেছে অন্য জায়গায়। সেনাঘাঁটি তো নিরাপদ জায়গা। সেখানে রয়েছে সবসময়ের টহলদারি। মাছি গলার উপায় থাকে না। আপাতদৃষ্টিতে এমন নিরাপদ জায়গায় কীভাবে ঢুকে পড়ল সন্ত্রাসবাদীরা? নিজেরাই কি বের করেছিল রোডম্যাপ? নাকি স্থানীয় মানুষের হাত ছিল এর পিছনে? গোয়েন্দাদের মনে এই বিষয়টি কিন্তু নাড়া দিয়েছে। স্থানীয় মানুষজনের সাহায্য নিয়েই জঙ্গিরা কাঁটাতারের বেড়া অতিক্রম করে সেনাঘাঁটিতে প্রবেশ করেছিল বলে মনে করা হচ্ছে। সেনালাইন উপেক্ষা করে কীভাবে হানা দিল জঙ্গিরা, তা-ও কিন্তু খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। এবেলা
২১ সেপ্টেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/ইসলাম/নাঈম/