বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০৭:৫৮:২০

‘একবারও মনে হচ্ছে না কে হিন্দুস্তানি, কে পাকিস্তানি’

‘একবারও মনে হচ্ছে না কে হিন্দুস্তানি, কে পাকিস্তানি’

আন্তার্জাতিক ডেস্ক : উরি সেক্টরের সেনা ক্যাম্পে জঙ্গি হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক খুবই খারাপ হয়ে উঠেছে৷ ফলে দিল্লি-লাহোর বাসে যাত্রী প্রায় নেই বললেই চলে৷ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে লাহোর থেকে দিল্লির ডক্টর আম্বেদকর বাস টার্মিনালে যে বাসটি পৌঁছয় তাতে ছিলেন মাত্র দুজন যাত্রী৷ ইসলামাবাদ-নয়াদিল্লি কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতির পরও এই পাক দম্পতি ভারতে এসেছেন৷ বাস টার্মিনাল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, দিল্লি থেকে লাহোর গামী বাসটি পুরো খালি গিয়েছে৷

আগত পাক দম্পতি মুহাম্মদ আবিদ ও তার স্ত্রী জানিয়েছেন, যখন আমরা দিল্লির টিকিট কিনছিলাম তখনই বুঝতে পারি বাসটি খালি যাবে৷ বাসে উঠে দেখি আর কোনো যাত্রী নেই৷ এর আগে যেবার এসেছিলাম তখন বাসভর্তি যাত্রী ছিল৷  লাহোর থেকে দিল্লি বারো ঘণ্টার বাস সফর শেষে এই পাক দম্পতির মন্তব্য, ‘আমরা হিন্দুস্থানে পৌঁছে অত্যন্ত স্বস্তি পেলাম৷ এই পরিষেবা চালু রাখা দরকার৷’

উরিতে হামলার পর অত্যন্ত চিন্তা নিয়েই ভারতে এসেছেন মুহাম্মদ আবিদ৷ এর আগে দিল্লির অ্যাপোলো হাসপাতালে তার লিভার প্রতিস্থাপন হয়েছে৷ এবার ছিল রুটিন চেক আপ৷ সীমান্তের উত্তেজনার পর প্রথমে ভারতে আসার বিষয়ে অস্বস্তিতে ছিলেন পাক দম্পতি৷ পরে দিল্লির টিকিট কেটেই ফেলেন তারা৷ চিকিৎসার জন্য এক সপ্তাহে দিল্লি থাকবেন আবিদ দম্পতি৷ তাদের কোনো আত্মীয় নেই ভারতে৷

দিল্লি-লাহোর বাস পরিষেবা ‘সদা এ সরহদ’ চালু হয় ১৯৯৯ সালে৷ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী এই বাসে করেই লাহোর গিয়েছিলেন৷ পরে ২০০১ সালে সংসদ ভবনে জঙ্গি হামলার পর কয়েকদিনের জন্য বাস পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছিল৷ দিল্লি ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন(ডিটিসি)-র চিফ জেনারেল ম্যানেজার একে গোয়েল জানিয়েছেন, একসময় লাভ দায়ক এই বাস পরিষেবা গত এক বছর ধরে লোকসানে চলছে৷

তিনি জানান, ২০১৪ সালে ওয়াঘা বিস্ফোরণের পর থেকে বাসটি সরাসরি লাহোর পর্যন্ত আর নিয়ে যাওয়া হয়না৷ সীমান্ত পার করার পর যাত্রীদের অন্য বাসে লাহোর নিয়ে যাওয়া হয়৷ দিল্লি থেকে যাত্রীরা গেলেও লাহোর থেকে আসা যাত্রীদের সংখ্যাটা ক্রমশ কমছে৷ ফলে লাভও কমছে৷

আবিদ জানিয়েছেন, দুই দেশের মধ্যে বাস পরিষেবা চালু রাখা খুব জরুরি৷ বিমান ভাড়ার থেকে অনেক কম খরচে দিল্লি আসা যায়৷ উরি হামলার পর দিল্লি আসার অনুভূতি কেমন জানতে চাইলে? মুহাম্মদ আবিদের স্ত্রী জানিয়েছেন, ‘দিল্লি পৌঁছে মনে হচ্ছে না দু দেশের মধ্যে ঝগড়া চলছে৷ একবারও মনে হচ্ছে না কে হিন্দুস্তানি, কে পাকিস্তানি’৷-কলকাতা২৪
২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/শান্ত/মো:শাই

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে