রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:২৫:২৮

জীবনযুদ্ধের আশ্চর্য কাহিনি: উরিতে শহিদ বাবার স্বপ্ন পূরণে ব্রতী তিন মেয়ে

জীবনযুদ্ধের আশ্চর্য কাহিনি: উরিতে শহিদ বাবার স্বপ্ন পূরণে ব্রতী তিন মেয়ে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বাবা নায়েক সুনীল কুমার বিদ্যার্থী ছিলেন সেনাকর্মী। দিন কয়েক আগে উরির সেনাঘাঁটিতে জঙ্গি হামলায় মারা যান সুনীল। আর তাঁর তিন মেয়ে বাবার আকস্মিক মৃত্যুর পরদিনই স্কুলের পরীক্ষায় বসে আশ্চর্য মানসিক দৃঢ়তার পরিচয় দিল।

সুনীলের বাড়ি বিহারের গয়ায়। উরিতে পোস্টেড ছিলেন তিনি। আগামী বছর চাকরি থেকে অবসর নেওয়ারও পরিকল্পনা ছিল তাঁর। ভেবেছিলেন, গয়ায় নিজেদের একটি বাড়ি তৈরি করে বাকি জীবনটা সেখানেই কাটিয়ে দেবেন। আকস্মিক জঙ্গি হামলার ফলে সেই পরিকল্পনা আর বাস্তবায়িত হতে পারেনি। কিন্তু সুনীলের অন্য স্বপ্নগুলোও অধরা থেকে যাক, সেটা চায়নি তাঁর তিন মেয়ে আরতি, অংশু এবং অংশিকা। ডিএভি স্কুলের এই তিন ছাত্রী যথাক্রমে ক্লাস এইট, ক্লাস সিক্স ও ক্লাস টু-এর ফার্স্ট সেমেস্টারের পরীক্ষা দিতে বসে পড়ে বাবার মৃত্যুর পরের দিনই।

উরি হামলার পরের দিন সুনীলের বড় মেয়ে আরতির ছিল সমাজবিজ্ঞানের পরীক্ষা। সর্বকনিষ্ঠ অংশিকার ছিল হিন্দি পরীক্ষা। সেদিন তারা সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে স্কুলড্রেস পরে যথারীতি স্কুলে পৌঁছয়, এবং সহপাঠীদের সঙ্গে পরীক্ষা দিতে বসে পড়ে। কিন্তু বাবার জন্য মন খারাপ হয়নি তাদের? প্রশ্ন করতেই ৮ বছরের অংশিকা গাল বেয়ে গড়িয়ে নেমে আসা চোখের জলের ধারা হাতের উল্টো পিঠে মুছে বলে, ‘না। আমাদের বাবা দেশের জন্য শহিদ হয়েছেন। দুঃখ নয়, বাবার কথা মনে পড়লে আমার গর্ববোধ হয়।’ কিন্তু এই একরত্তি মেয়েগুলো এতখানি মনের জোর সঞ্চয় করল কীভাবে? বছর তেরোর আরতি বলে, ‘দুঃসংবাদটা পাওয়ার পর প্রথমে মনে হয়েছিল পরীক্ষা দেব না। কিন্তু তারপরেই মনে পড়ে যায়, আমাদের পড়াশোনায় কোনও রকমের শৈথিল্য বাবা অপছন্দ করতেন। বাবা চেয়েছিলেন, আমি আইআইটি-তে পড়ে এয়ারোনটিকাল ইঞ্জিনিয়ার হব। আর আমার বোনকে ডাক্তার গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন বাবা। সেই স্বপ্ন আমাদের পূরণ করতেই হবে।’

আরতিদের বাবা ছিলেন সেনাবাহিনীর বীর সেনানী। মানসিক দৃঢ়তায় আরতিরাও যেন বাপ-কা-বেটি। বাবাকে হারানোর বেদনাই যেন তাদের সংকল্পকে আরও দৃঢ় করে তুলছে। নিজেদের ক্ষতস্থানকে কীভাবে নিজেদের শক্তির উৎস করে তোলা যায়, তারই যেন দৃষ্টান্ত হয়ে উঠছে আরতি, অংশু, আর অংশিকা।-এবেলা
২৫ সেপ্টেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে