 
                                        
                                        
                                       
                                        
                                             
                                                                                    
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : একদিকে যুদ্ধবিমানের মহড়া দিয়ে পাকিস্তানি বাহিনীর হুমকি, অন্যদিকে, ভারত যাতে কোনো সামরিক পদক্ষেপ না নেয়, তা নিশ্চিত করতে মরিয়া পাকিস্তাননি কূটনীতিকরা।
এছাড়া ‘যুদ্ধ করার ঝুঁকি ভারত নেবে না’- পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এখন বার বার এই কথাই বলছেন। নিজেদের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ধরে রাখার স্বার্থেই ভারত যুদ্ধ এড়িয়ে যাবে বলেও দাবি করছে তারা। তবে ভারতীয় কূটনীতিকরা বলছেন, 'স্নায়ুর লড়াইতে দ্বিমুখী নীতি গ্রহণ করে আসলে ভারতকে ঘুরপথে যুদ্ধ না করার বার্তা দিতে চাইছে পাকিস্তান।'
গভীর রাতে ইসলামাবাদের আকাশে এফ-১৬ ওড়ানো বা লাহৌর-ইসলামাবাদ হাইওয়েতে যুদ্ধবিমানের অবতরণ— এমন নানা সামরিক কর্মসূচি চলছে ভারতের পশ্চিম সীমান্তের ওপারে। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমে গরম গরম বিবৃতিও দিচ্ছেন দেশটির সরকার ও সেনাকর্মকর্তারা। কিন্তু যুদ্ধের জন্য নিজেদের যতই প্রস্তুত বলে দাবি করুক পাকিস্তান, সে দেশের নেতারা যে আতঙ্কে, তা ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে।
পাকিস্তানের কূটনীতিকরা ভারতের সম্ভাব্য পদক্ষেপ সম্পর্কে কী বলছেন, পাক সংবাদমাধ্যমে তা এখন বড় খবর। পাকিস্তানের ‘ডন’ পত্রিকার ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পাক কূটনীতিককে উদ্ধৃত করা হয়েছে।
সেই কূটনীতিক বলেন, ভারত নিজেদের অর্থনীতির স্বার্থেই পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবে না। কারণ যুদ্ধ হলে ভারতের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে।
ওই কূটনীতিক আরও বলেন, '‘কোনো যুদ্ধ হবে না। যুদ্ধ শুরু করার কোনো ইচ্ছাও নেই। আর ভারতও বুঝতে পারছে যে এই পরিস্থিতিতে একটা যুদ্ধ তাদের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেবে।'
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ভারত। পাকিস্তান যতই রণহুঙ্কার দিক, ভারতের সঙ্গে একক সংঘাতে জড়াতে হলে ফল কী হতে পারে, তা নিয়ে পাকিস্তানের সরকার এবং সেনারা যথেষ্ট চিন্তায় রয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন ভারতীয় কূটনীতিকরা।
তারা বলছেন, অর্থনৈতিকভাবে ইতিমধ্যেই বিপর্যস্ত পাকিস্তান আন্তর্জাতিক মহলে ‘ব্যর্থ রাষ্ট্র’ তকমা পেয়েছে। বৈদেশিক অনুদান ছাড়া অচল পাকিস্তান। সন্ত্রাসের মদতদাতা হিসেবে পরিচিতি তৈরি হওয়ায় সেই সব অনুদানের উৎসও কমে আসছে। এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধের খরচ জোগানোও যে পাকিস্তানের জন্য খুব কঠিন তা নওয়াজ শরিফ ও জেনারেল রাহিল শরিফ জানেন। তাই পাকিস্তান বার বার যুদ্ধ না করার বার্তা দিচ্ছে।
ভারত যদি পাকিস্তানকে আক্রমণ করে, তাহলে চীন পাকিস্তানের হয়ে লড়াই করবে, এমন বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। চীন পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছে বলে গত শনিবার পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতেও জানানো হয়।
এবিষয়ে ভারতীয় কূটনীতিকরা বলেন, 'চীনা জুজু দেখিয়ে ভারতের আক্রমণের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার চেষ্টা করছে পাকিস্তান। তবে চীন এখনও কোনো বিবৃতি দিয়ে পাকিস্তানের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেনি। ভারতের সামরিক পদক্ষেপকে ভয় পাচ্ছে বলেই পাকিস্তান এমন নানা কৌশল নিচ্ছে।' সূত্র : আনন্দ বাজার
২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/শান্ত/মো:শাই