আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাক-ভারত সীমান্ত পেরিয়ে জঙ্গি অনুপ্রবেশ কোনও নতুন ঘটনা নয়। সীমান্ত জুড়ে থাকা কাঁটাতার পেরিয়ে কিভাবে ঢোকেন জঙ্গিরা? সেটা খতিয়ে দেখতে গিয়ে গত কয়েক বছরে বিভিন্ন জায়গায় একাধিক সুড়ঙ্গের খোঁজ পেয়েছে ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী। কখনও সুড়ঙ্গ মিলেছে রাজস্থানে, কখনও জম্মুতে আবার কখনও পাঞ্জাবে।
মুন্নিকে বাড়ি ফেরাতে সুড়ঙ্গ দিয়েই পাকিস্তানে ঢুকেছিলেন বাজরঙ্গি ভাইজান। কিন্তু এটা নিছক সিনেমার গল্প নয়। LoC-র আশেপাশে এমন অনেক সুড়ঙ্গের খোঁজ মেলে প্রায়শই। চলতি বছরের মার্চ মাসে আরএস পুরা সেক্টরের কাছে এএমকে পোস্টের কাছে পাওয়া গিয়েছে সুড়ঙ্গ, যা সরাসরি পৌঁছেছে ভারতের সীমানা ভেদ করে। পাক রেঞ্জার্স ও জঙ্গিরাই এই সুড়ঙ্গ খুড়েছিল বলে ভারতের ধারণা। এইভাবে একের পর এক টানেল দুশ্চিন্তায় ফেলেছে বিএসএফ-কে।
বিএসএফের তরফে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে, যাতে এই ধরনের সুড়ঙ্গ খুঁজে বের করার জন্য সেন্সর নেটওয়ার্ক তৈরি করার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। এই ধরনের সুড়ঙ্গ খুঁজতে একটি বিশেষ যন্ত্র দিয়ে সাহায্য করতে চেয়েছে ইজরায়েল। যদিও এখনও সেই চুক্তি বাস্তবায়িত হয়নি। তাই বিএসএফ নিজে হাতে খুঁজে বের করে এই সুড়ঙ্গ। এই সুড়ঙ্গ খুঁজতে প্রতি মাসে একবার করে অভিযান চালায় বিএসএফ। চলতি বছরে এই সুড়ঙ্গ পাওয়ার পর একটি ফ্ল্যাগ মিটিংও ডাকে বিএসএফ। এই টানেল খুঁজতে পাকিস্তান সেনাকে সাহায্যের আবেদনও জানানো হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত পাকিস্তান রেঞ্জার্সের তরফে কোনও উদ্যোগ দেখা যায়নি বলে ভারতের অভিযোগ।
গুরুদাসপুর: মার্চ, ২০০১ সালে প্রথম সুড়ঙ্গ খুঁজে পাওয়া গিয়েছে পাঞ্জাবের গুরুদাসপুরে। ভারতের প্রায় ১৩৫ মিটার ভিতরে পৌঁছেছিল সেই টানেল।
বারমের: ২০০৮ সালে এই টানেল খুঁজে বের করেছিল যোধপুর পুলিশ। রাজস্থানের বারমের সেক্টরে ওই সুড়ঙ্গের সন্ধান পাওয়া যায়। মাদক ব্যবসায়ীরা এই সুড়ঙ্গ খুঁড়েছিল বলে অনুমান করা হয়। পাকিস্তানের এক গ্রাম থেকে সুড়ঙ্গ শুরু হয়েছিল, শেষ হয়েছিল বারমেরে।
চাকলা: ২০০৯ সালে চাকলার নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে পাওয়া যায় এই সুড়ঙ্গের হদিশ। প্রবল বৃষ্টিতে বেরিয়ে পড়ে ওই টানেল।
সাম্বা: ২০১২ সালে এই বছরে পাঞ্জাবের পাঠানকোটের কাছে প্রথমে একটি ৪০ মিটার লম্বা টানেল পাওয়া যায়, যার গভীরতা ছিল ২০ ফুট। ওই বছরেই আরও একটি সুড়ঙ্গ পাওয়া যায়, যার দৈর্ঘ্য ছিল ৫৪০ মিটার।
পালনওয়ালা: ২০১৪ সালে জম্মু সেক্টরের পালনওয়ানাতে খোঁজ মিলেছিল একটি ৫০ মিটার লম্বা টানেলের।
আর এস পুরা: মার্চ, ২০১৬ সালে ভারতের সীমান্ত পেরিয়ে ৩০ মিটার ঢুকে এসেছিল এই সুড়ঙ্গ। ১০ ফুট গভীরে ছিল এই সুড়ঙ্গ। এই সুড়ঙ্গ নির্মাণে বিশেষ ধরণের যন্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল বলে জানায় বিএসএফ।
২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি